একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) আগে গোটা রাজ্যজুড়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন। নির্বাচনের আগে যেমন এই প্রকল্প হয়েছিল ঠিক তেমন কথামতো তৃণমূল কংগ্রেস জিতে যাওয়ার পর ফের দুয়ারে সরকার প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে আগামী ১৬ আগস্ট থেকে। দ্বিতীয় পর্বে দুয়ারে সরকারে নয়া সংযোজন হয়েছে "লক্ষীর ভান্ডার" প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তপশিলি ও আদিবাসী মহিলাদের মাসে ১ হাজার টাকা ও জেনারেল মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী প্রত্যেক মহিলা এই প্রকল্পের সুযোগ পাবেন। তবে জালিয়াতি কমানোর উদ্দেশ্যে এবার মমতা সরকার নতুন ফর্ম ফিলাপের নিয়ম তৈরি করেছে।
আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "এবার দুয়ারে সরকারে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য আলাদা ক্যাম্প থাকছে। সেখান থেকে বিলি করা হবে ফর্ম। তবে সেই ফর্মে ইউনিক নম্বর থাকবে। সেই নম্বর নথিভূক্ত হবে সরকারের কাছে। আর এই নম্বর ছাড়া ফর্ম ফিলাপ করা যাবে না। এর ফলে বাইরে থেকে ফর্ম কেনা যাবে না।" আসলে সরকারের এমন জনকল্যাণমূলক কাজ অনেক সংগঠন ফর্ম জালিয়াতি করে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে। তা প্রতিহত করতেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। লক্ষীর ভান্ডার ছাড়াও কৃষক বন্ধু স্বাস্থ্যসাথী ফর্মেও ওই ইউনিক নাম্বার থাকবে। কারোর অভিযোগ জানাতে হলে সে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরে ১০৭০/ ২২১৩-৩৫২৬ এই দুই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন।
এছাড়াও নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুয়ারে রেশন প্রকল্প সম্বন্ধে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, "মে মাসে পরীক্ষামুলকভাবে ঝাড়গ্রামের ৩৫ টি পরিবারের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া গিয়েছিল। ঘরের সামনে রেশন পেয়ে রীতিমতো আপ্লুত হয়েছিল গরিব মানুষগুলি। এবার চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ৬ তারিখ বা ভাইফোঁটার দিন থেকে শুরু হবে রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প।" তিনি আরও জানিয়েছেন, "পরিযায়ী শ্রমিকরা 'এক দেশ এক রেশন' প্রকল্পের আওতায় থাকলে তারাও দুয়ারে রেশন প্রকল্পের সুবিধা পাবে। সেক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে যে ওই ব্যক্তি অন্য রাজ্য থেকে রেশন নিচ্ছেন না।"
অন্যদিকে রাজ্য সরকার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ জানিয়েছেন, মোট ৭০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তকে মুক্তি দেওয়া হবে। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের মধ্যে ৬৬ জন পুরুষ ও ৭ জন মহিলা। করোনা পরিস্থিতিতে বন্দীদের বয়সের কথা মাথায় রেখে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আসলে ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড ১৯৭৩ এর ৪৩২ ধারা অনুযায়ী অন্তত ১৪ বছর জেল খাটার পর তাদের মুক্তির ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে। সেই নিয়ম অনুযায়ী করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ৭০ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে।