করোনা (Corona) সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউতে বেহাল অবস্থা হয়েছিল বাংলার। তবে ঠিক সময়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রাজ্যজুড়ে কড়া বিধি-নিষেধ জারি করেছিল। তার ফলে স্টাফ স্পেশাল লোকাল ট্রেন ছাড়া জনগণের জন্য কোন লোকাল ট্রেন (Local Train) চলছে না। এর ফলে সম্প্রতি বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছে। এরপর অনেকেই মনে করেছিলেন আগামী ১ লা জুলাই থেকে কড়া বিধি নিষেধ সময়সীমা শেষ হলে আগের মতোই লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হবে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাতে কার্যত আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার জল ঢেলে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নবান্নের (Nabanna) একটি সাংবাদিক বৈঠক থেকে লোকাল ট্রেন চালু হবে নাকি সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেছেন, "করোনা পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু ট্রেন চলাচল শুরু হলেই তা আবার ছড়িয়ে পড়বে। অন্যান্য পরিবহন সীমিত সংখ্যায় চলছে। শিথিল করা হয়েছে কঠোর বিধি নিষেধ।" মুখ্যমন্ত্রীর আজ এমন বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে আগামী ১ লা জুলাই থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হচ্ছে না।
এছাড়া আজ নবান্ন সাংবাদিক বৈঠকে নির্বাচনের আগে দেওয়া কথা রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার মাত্র দেড় মাসের মধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেল স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প। এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে আগামী ৩০ জুন। আসলে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পড়াশোনার জন্য পড়ুয়াদের এককালীন ১০ লাখ টাকার ঋণ দেবে তৃণমূল সরকার। এই প্রকল্পের ক্যাবিনেট অনুমোদন মিলেছে বলে আজ নবান্ন সভাঘরে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এই বিষয়ে বলেছেন, "পড়ুয়াদের ঋণ দেওয়ার যে প্রকল্পের কথা জানানো হয়েছিল তার মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছে। আজকের দিনটি পড়ুয়াদের জন্য। রাজ্যে দশম শ্রেণীতে প্রতিবছর কমবেশি ১০ লাখ পড়ুয়া থাকে এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে প্রায় ৯ লাখ। দশম থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সহ যাবতীয় পড়াশোনার খরচ এর জন্য রাজ্য সরকার পড়ুয়াদের ১০ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করবে। এই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাকরি পাওয়ার পরবর্তী ১৫ বছর অব্দি সময় পাবে পড়ুয়ারা।"
অন্যদিকে গতকাল থেকেই বঙ্গ রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে মুকুল রায়ের PAC চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা নিয়ে। তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করার পর ওই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ায় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আসলে চেয়ারম্যান পদে বিরোধী বিধায়ক সাধারণত নিযুক্ত হয়। এই প্রসঙ্গে বিজেপি মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল। তবে আজ নবান্ন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে মুখ খুললেন। তিনি বলেছেন, "পিএসসি চেয়ারম্যানের জন্য যে কেউ মনোনয়ন জমা করতে পারে। মুকুল রায় বিজেপি সদস্য। তাঁকে তো কালিম্পং এর বিনয় তামাং এর দল সমর্থন জানিয়েছে। আমরাও সমর্থন করবো। এটা স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন।" সেই সাথে তিনি বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেছেন, "যদি ভোটাভুটি হয় আমরা ভোটে জিতব। ভোট আসুক না, কার কত শক্তি দেখে নিক। মানুষের ভোটে আমরা জিতে এসেছি। এবার সেই পথেই যাঁকে প্রয়োজন তাঁকে জেতাবো।"