প্রায় আধ ঘণ্টার ভার্চুয়াল বৈঠক। "সেখানে উনিই কেবল বলে গেলেন, আমাদের বলার সুযোগটুকুও দিলেন না। মুখ্যমন্ত্রীদের যদি বলতে দেবেন না, তাহলে ডাকলেন কেন?"- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের পর এমন অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, "যুক্তরাষ্ট্রীয় কোন কাঠামোই মানছেন না প্রধানমন্ত্রী। ভার্চুয়াল মিটিং-এ ডেকে মুখ্যমন্ত্রীদের কোন কথাই বলতে দিলেন না প্রধানমন্ত্রী।" পাশাপাশি তিনি এ অভিযোগও করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীদের এড়িয়ে কেবল জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। "এক তরফা কথা নয়, এক তরফা অপমান করে গেলেন উনি"।
বৃহস্পতিবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ১০ টি রাজ্যের ৫৪ টি জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। সেখানে মমতা-সহ ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও ছিলেন। বৈঠক শেষেই নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলনে 'সুপার ফ্লপ', ‘ক্যাজুয়াল মিটিং’ নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দেন মমতা। অভিযোগ করেন, বিজেপি-শাসিত রাজ্যের কয়েকজনের কথা শুনেছেন মোদী। মুখ্যমন্ত্রীদের কোনও কথা বলতে দেওয়া হয়নি। সেইসঙ্গে প্রশ্ন করেন, "একজন প্রধানমন্ত্রী এত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন যে মুখ্যমন্ত্রীদের কথা বলতে দেওয়া হল না। এত ভয় কিসের? এত অবহেলা কিসের?"
রাজ্যগুলির করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কোন কথা বলতে দেওয়া হয়নি। তিনি নিজেই সব বলে গেলেন। অনেক কথা নিয়ে বসেছিলাম। "ভ্যাকসিনের ঘাটতি এখন সব রাজ্যের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন করলেন না তো!’’ অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মোদীর সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প নিয়েও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, "এই পরিস্থিতিতেও স্ট্যাচু, বিল্ডিং বানাচ্ছে ওঁরা!" দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ওষুধ, অক্সিজেন, টিকা মিলছে না। এসব নিয়ে কোন বার্তা দেননি প্রধানমন্ত্রী। কোনদিন উনি হয়তো বলে বসবেন, "ঘণ্টা বাজিয়ে দিন করোনা কমে গেছে। আমরা ভেবেছিলাম বাংলার কথা বলব। বৈঠকে ডেকেও একটা কথা দিচ্ছেন না।"
উল্লেখ্য, মূলত বিভিন্ন রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি বুঝতে এবার কেন্দ্রের তরফে জোর দেওয়া হচ্ছে জেলাগুলিতে। তাই বৈঠকে ডাকা হচ্ছে জেলাশাসকদের। এদিন সেই বৈঠক থেকেই মোদী বার্তা দিয়েছেন, জেলাগুলোকে করোনা সচেতনতায় আরও দায়িত্ব নিতে। টিকাবণ্টনে জেলাস্তরের কর্মীদের কাজের সুযোগ আরও বেশি করে দেওয়া হোক। তাহলেই জেলার পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। পাশাপাশি, টিকা নষ্ট করা নিয়েও কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, টিকা নষ্ট করার অর্থ নিজের রক্ষাকবচ থেকে একটি অস্ত্র বাদ দেওয়া। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, "পুতুলের মতো বসে থাকলাম। কোন কথাই বলতে দেওয়া হল না।" প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেও কোন উত্তর পান না, আর বৈঠকে ডেকে কোন কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ মমতার।