নদিয়ার হাঁসখালি ধর্ষণ-কাণ্ড নিয়ে ফের চাপানউতোর রাজ্য-রাজনীতিতে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির স্পষ্ট অভিযোগ, ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের স্পষ্ট যোগাযোগ আছে। সঠিক পুলিশি তদন্তে ঘটনার প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে। তার প্রেক্ষিতেই আজ বিজেপির ডাকে হাঁসখালিতে ১২ ঘন্টার বনধ ডেকেছে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বদের তরফে এই ঘটনার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য বিজেপি থামতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, যেভাবে গোটা রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের জমানায় খুন, ধর্ষণ, রাহাজানির ঘটনা ঘটছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।
হাঁসখালিতে ঠিক কী ঘটেছিল? বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল এক নাবালিকা। অভিযোগ সেখানেই নাকি মাদক খাইয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় নাবালিকা বাড়ি ফিরে এলে ক্রমাগত হুমকির অভিযোগ উঠেছে। নিয়ে যাওয়া হয়নি কোন হাসপাতালে। ক্রমাগত রক্তক্ষরণের ফলেই সেই নাবালিকার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। যদি সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যেত, তাহলে হয়তো মেয়েটিকে বাঁচানো সম্ভব হত, বলছেন একাংশ।
না, ঘটনার পর মেয়েটির মেলেনি প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু। উল্টে হাসপাতালে গেলে কিংবা পুলিশের দ্বারস্থ হলে আরও বড়সড় বিপদের মুখে পড়তে হবে বলে ক্রমাগত হুমকি। নাবালিকার মৃত্যুর পর করা হয়েছে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা। তড়িঘড়ি মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খোদ মৃত নাবালিকার পরিবারের তরফে এমনই একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে এসেছে।
ঘটনায় জড়িত স্থানীয় গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের সমর গয়ালির ছেলে সোহেল গয়ালি। সমর গয়ালি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য। ঘটনার পাঁচ দিনের পর থানায় মামলা দায়ের। ঘটনার সঙ্গে অনেকেই হাথরস ঘটনার তুলনা টেনেছেন। ইতিমধ্যেই সোহেল গয়ালিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাবা সমর গয়ালি বেপাত্তা। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।
গত কয়েক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই ঘটনাগুলির সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক জড়িয়ে আছে। বামনেতা সুজন চক্রবর্তী এক টুইট বার্তায় বলেছেন, "মাটিয়া মালদার পর এবার নদীয়ার হাঁসখালি। ভয়ংকর এবং রোমহর্ষক। নাবালিকা ধর্ষণ এবং খুন।"
