দুপুরেই বঙ্গ বিজেপির অন্যতম পুরনো সৈনিক, বিজেপির টিকিটে জিতে আসা পরপর দুবারের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ‘দলবদল’ করে তৃণমূল শিবিরে যোগদান করেছেন। যা নিয়ে রীতিমত তোলপাড় পড়ে গেছে রাজ্য-রাজনীতিতে। এবার কি তবে বাবুলের পথেই হাঁটবেন আরও এক সদ্য দলবদলকারী ‘নব্য বিজেপি’ বিধায়ক হিরণ? সরাসরি রাজ্য সভাপতির বক্তব্যের বিরোধিতা করে সেই জল্পনাই উসকে দিলেন খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়।
ঘটনার সূত্রপাত রেলের ওভারব্রিজ তৈরি করাকে কেন্দ্র করে। রেলের তরফ থেকে খড়গপুরে তৈরি করা হচ্ছে তিনটি ওভারব্রিজ। আর সেই ওভারব্রিজ যে পুজোর আগেই উদ্বোধন হবে তেমনই ইঙ্গির দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একইসাথে খড়গপুর শাখার ডিআরএম-এর কাজেরও প্রসংশা করেছেন তিনি। আর রাজ্য সভাপতির এহেন বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীতে হেঁটে হিরণ সরাসরি জানালেন, রেলের ইঞ্জিনিয়ার এবং ঠিকাদারদের তিনি একেবারেই অখুশি। তাঁর কথায়, “ভারতীয় রেলের সমালোচনা করব না। দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান। রেলমন্ত্রী অত্যন্ত সজ্জন এবং ভালো মানুষ। তিনি আমাকে বলেছেন, তিনি বাংলার ভালর জন্য কাজ করতে চান। তবে খড়গপুরের রেলের যে অফিসাররা ফুটব্রিজের কাজ করাচ্ছেন, তাঁরা কর্মরত শ্রমিকদের নুন্যতম নিরাপত্তার ব্যবস্থাটুকু করছেন না। রেলের এতবড় কাজ চললেও দেখা নেই কোনও অফিসার বা ইঞ্জিনিয়ারের। শ্রমিকদের মাথায় নেই হেলমেট। প্রায় রোজই ঘটছে দুর্ঘটনা। কিছু দোকানদারকে রেখে দেওয়া হয়েছে, কিছুজনকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এভাবে কি উন্নয়নের কাজ হয়?” আর হিরণের এই মন্তব্যের পরেই শুরু হয়েছে জল্পনা।
এদিকে খড়গপুরের বিধায়কের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে একহাত নিয়েছে তৃণমূলও। পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি এবং তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি হিরণকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দারের মতো কাজ করছে রেল। না আছে ইঞ্জিনিয়ার, না আছে স্টাফ। ভালো কিছু করার পরিকল্পনা পর্যন্ত নেই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি যেসব বাজে কথা বলেন, মানুষকে সাথে নিয়ে তার প্রতিবাদ করেছেন হিরণ”।
একেই বঙ্গ বিজেপির অবস্থা শোচনীয়। সামান্য দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে নেতা, বিধায়ক এমনকি বিজেপি সাংসদও দলত্যাগ করে নাম লেখাচ্ছেন তৃণমূলের খাতায়। সেখানে দাঁড়িয়ে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা হিরণ এহেন মন্তব্য যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।