প্রথম দফা নির্বাচন শুরুর দুদিন আগেও শাসক-বিরোধী সংঘাত থেকে নিস্তার নেই। জেলায় জেলায় বাড়ছে তৃণমূল-বিজেপির পারস্পরিক সংঘর্ষ। একদিকে পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুরে বিজেপি নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে লাগাতার গোলাগুলি চালানোর অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় তৃণমূল কার্যালয়ে সদলবলে চড়াও হয়ে কার্যালয় ভাঙচুর ঘটনায় অভিযুক্ত হলেন বিজেপি নেতা ও কর্মী সমর্থকরা। দুই জেলার এই বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে বার্নপুরের রাঙাপাড়া এলাকায় বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি দিগ্বিজয় সিং-এর বাড়ি লক্ষ্য করে একনাগাড়ে গুলিবর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনার সময় বাড়িতে ওই বিজেপি নেতা না থাকলেও ঘরে ছিলেন তার বৃদ্ধ মা-বাবা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে প্রায় ৮-১০ রাউন্ড গুলি চালায় ওই দুষ্কৃতীরা। ভোটের মুখে দিগ্বিজয় সিং, তার পরিবার ও স্থানীয় বিজেপিকে ভীতি প্রদর্শন করার জন্যই এহেন ঘৃণ্য কাজে নেমেছে তৃণমূল, দাবি স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের। ঘটনাস্থলে আসেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়ে প্রার্থীপদ অর্জনকারী জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও আসানসোল উত্তরের বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হীরাপুর পুলিশ।
অন্যদিকে, ময়নার গোজিনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর হয়। তৃণমূল সূত্রের খবর কিয়ারানা এলাকায় পথসভা না করার জন্য তাদের হুমকি দেয় বিজেপি। কিন্তু তা উপেক্ষা করে পথসভা করে তৃণমূল। ফলত, বিজেপি নেতাকর্মীরা সদলবলে চড়াও হয়ে তৃণমূল কার্যালয়ে ব্যপক ভাঙচুর চালায়। চেয়ার, আসবাব, প্রচারের মাইক সবই বিনষ্ট করে তারা। এই ঘটনার প্রসঙ্গে ময়নার এলাকার তৃণমূল নেতা বীরেশ্বর পান্ডা অভিযোগ করেন, "বিজেপি বারবার হুমকি দিচ্ছিল, এই এলাকায় তৃণমূলের কোনও সভা বা প্রচার করা যাবে না। সেই হুমকি উপেক্ষা করে পুলিশের অনুমোদন নিয়ে আমরা পথসভা করি। সভা শেষে সবাই যখন বাড়ি ফিরছিলাম সেই সুযোগে বিজেপি-র দুষ্কৃতীরা দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে তাণ্ডব চালায়।" অন্যদিকে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা দোষারোপ করেন তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল। তিনি বলেন, মঙ্গলবার ময়নায় বিজেপি-র একটি রোড শো ছিল। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার সময় বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। এই হামলার ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতেই একটি নয়, নিজেদের তিনটি কার্যালয় নিজেরাই ভেঙেছে তৃণমূল।