বাবার যাবজ্জীবনের পেছনে রয়েছে ছেলের হাত, বাবাকে সাজা পেতে দেখে খুশী ছেলে। হ্যাঁ, এমনই ঘটনা ঘটেছে পুরুলিয়ায়। ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে চার বছর পুরোনো খুনের অভিযোগ। ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট। পুরুলিয়ার কেন্দা থানার ভাদশা গ্রামে খুন হন অষ্টমী মাহাতো নামে এক মহিলা। অভিযোগের আঙুল ওঠে তার স্বামী চিরঞ্জীত মাহাতোর বিরুদ্ধে।
তাদের বড় ছেলে মৃগাঙ্কর বয়স তখন মাত্র উনিশ। তাঁর কথায়, "ওই দিন মনসা পুজো ছিল। আমি জ্যাঠার বাড়িতে পুজোর কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনতে পাই মায়ের, ‘বাবলা বাঁচা রে...।’ তখন ছুটে গিয়ে দেখি, বাবা মায়ের বুকের উপর বসে বাটালি দিয়ে মারছে। আমরা সকলে মিলে বাবাকে সরিয়ে দিই। তার পর আহত মাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেই সময় মা বলেছিল, ‘তোর বাবা আমাকে মেরে দিল।’ হাসপাতালেই মায়ের মৃত্যু হয়।" পুলিশকে সাক্ষ্য দেয় মৃগাঙ্ক এবং প্রতক্ষদর্শী হিসেবে তার বয়ানে হেফাজতে নেওয়া হয় বাবা চিরঞ্জীতকে।
চার বছর ধরে মামলা চলার পর অবশেষে রায়দান করা হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছে অভিযুক্ত চিরঞ্জীত। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। এই রায়ে খুশী হয়েছে মৃগাঙ্ক। তাঁর কথায়, "বাড়িতে অশান্তি ছিল। তবে এমন ঘটনা যে ঘটবে, তা ভাবিনি।" বিদ্বেষের চোটে বাবার নাম পর্যন্ত মুখে আনেনি সে। বলেছে, "যে অন্যায় করেছে, তার সাজা হয়েছে তাতে আমি খুশি।"