টানা বৃষ্টির জেরে কোথাও হাঁটু সমান জল, আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত। দক্ষিণ ২৪ পরগণার (South 24 Parganas) বিস্তীর্ণ এলাকা এখন ভাসছে জলের তলায়। এরমধ্যেই রবিবার ছিল শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়ানোর দিন। জলের তলায় ভাসছে স্বাস্থ্য কেন্দ্র। তাহলেও টিকা দেওয়ার কাজ বন্ধ রাখলে কি চলে? খবর গেল আশাকর্মীদের কাছ থেকে। তাই সব ফেলে হাঁড়িতে করে শিশুকে নিয়ে চললেন বাবা। খাওয়ালেন পোলিও টিকা। এ দৃশ্য দেখে নেটিজেনরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিং ২ নম্বর ব্লকের সারেঙ্গাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। টানা বৃষ্টিতে ডুবেছে এলাকার চারপাশ। এই পঞ্চায়েতের সিংহেশ্বর সাব সেন্টারও চলে গেছে জলের তলায়। কিন্তু রবিবার তো পোলিও টিকা খাওয়ানোর দিন। কীভাবে সন্তানদের পোলিও টিকা খাওয়াবেন, পেশায় ব্যাগ নির্মাতা নিজামুদ্দিন মোল্লা এ কথা জানতে পেরে কাতর হয়ে পড়লেন। সেই সময় সহায় হলেন আশাকর্মীরা। খবর পাঠালেন পোলিও টিকা খাওয়ানোর কথা। কিন্তু কীভাবে নিয়ে যাওয়া যায়? চারদিকে তো জল থইথই। বেছে নিলেন এক অভিনব পন্থা। সদ্য বাবা হওয়া নিজামুদ্দিন অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়িতে নবজাতককে নিয়ে চললেন আশাকর্মীদের কাছে। খাওয়ানো হল পোলিও টিকা। সঙ্গে আড়াই বছরের বড় ছেলে শামিমও চলল আর এক বাড়ির লোকের কাঁধে। দুজনকেই টিকা দিলেন আশাকর্মীরা। হাসি মুখে নবজাতকের মুখে দিলেন পোলিও টিকা।
এমন দৃশ্য দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনদের একাংশ। বছর সাতাশের বাবা নিজামুদ্দিনের এমন কান্ডকারখানায় অবাক আশাকর্মীরা। জানা গেল নবজাতকের বয়স মাত্র দিন ১৫। এমন অবস্থায় কোমর সমান জল ঠেলে তার মায়ের পক্ষে আশা সম্ভব নয়। এদিকে পোলিও না খাওয়ালেও মুশকিল। বাবা নিজামুদ্দিন বেছে নিলেন এক অভিনব পন্থা। অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়িতে আনলেন নবজাতককে। খাওয়ালেন পোলিও টিকা। আশাকর্মীদের এ হেন কাজকেও সাধুবাদ জানিয়েছেন একাংশ। বলছেন, এমন দুর্যোগের মাঝেও আশাকর্মীদের কর্তব্য-জ্ঞানকে কুর্নিশ জানাতে হয়।