বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনও সবজি নেই৷ অথচ চাষি হয়ত পেয়েছেন কিলো পিছু ১০–১২ টাকা, কোথাও তারও কম৷ সকলেরই জানা, ফড়ে, আড়তদার ইত্যাদি দু’–তিন হাত ঘুরে বাজারে সবজি পৌঁছায় বলে ক্রেতাদের ছ্যাঁকা লাগে, অথচ চাষির জীবনের অন্ধকার ঘোচে না৷
এই অবস্থা পাল্টে চাষির হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রমের ন্যায্য মূল্য৷ তা করেও দেখিয়েছেন কিছু চাষি, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সহায়তায়৷ একজোট হয়ে তাঁরা তৈরি করেছেন তাঁদের নিজস্ব সংস্থা এফপিসি (ফার্মার প্রোডিউসার কোম্পানি)৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থসাহায্যে সংস্থা থেকেই সার–বীজ–কৃষি সরঞ্জাম দেওয়া হচ্ছে কম দামে৷ ফসল উঠলে বাজার, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও ‘সুফল বাংলা’–র স্টলে তা বিক্রিতে সাহায্য করছে রাজ্য সরকার৷ ফলে ফড়ে–আড়তদারের হাত থেকে রেহাই পেয়ে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন চাষিরা৷ লাভের টাকা জমির পরিমাণ অনুযায়ী ভাগ হচ্ছে চাষিদের মধ্যে৷ এফপিসি–গুলি থেকে দেশের নানা প্রান্তে এমনকি বিদেশেও সবজি রপ্তানি হচ্ছে৷ পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায়, বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগণায় রমরম করে চলছে এফপিসি৷ দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভাঙড়েও আছে একটি সংস্থা৷ দুই মেদিনীপুর, নদিয়া ও হাওড়াতেও কাজ করছে এফপিসি৷
লকডাউনের সময় পরিবহণ বন্ধ থাকায় চোখে অন্ধকার দেখেছিলেন চাষিরা৷ বাইরে বিক্রি করতে না পারায় স্থানীয় বাজারগুলিতে সবজির দাম একেবারে তলানিতে ঠেকেছিল৷ সেই সময় উত্তর ২৪ পরগণার সহ–উদ্যানপালন অধিকর্তা চাষিদের বাঁচাতে অসাধারণ ভূমিকা নিয়েছিলেন৷ নিজে উদ্যোগ নিয়ে কলকাতার কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সরকারি স্টলগুলিতে ফসল বেচার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন৷
করোনা
Sources: wbhealth.gov.in. Modified data from: api.covid19india.org (license) with WB district name translations.
এই পথে রাজ্যের অধিকাংশ চাষিকে যদি ফড়ে, আড়তদারের কবল থেকে বাঁচানো যায়, তা হলে তাঁদের আর্থিক পরিস্থিতির প্রভূত উন্নতি হবে৷ কমে যাবে চাষি–আত্মহত্যা৷ হাতে পয়সা আসায় বাড়বে অন্য ভোগ্যদ্রব্যের কেনাবেচাও৷ কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা৷ দরকার ফড়ে–আড়তদার–পাইকারি ব্যবসায়ীদের শক্তিশালী দুষ্টচক্র ভাঙার। চাষির পাশে দাঁড়াতে সেই কাজে সরকার এগিয়ে আসবে তো?