দেশজুড়ে কার্যত ২০২০ সালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে করোনাভাইরাসের (Covid-19) নতুন রুপ ওমিক্রন (Omicron)। যে গতিতে সারা দেশে সংক্রমণের হার বাড়ছে তাতে করোনার তৃতীয় ঢেউ একপ্রকার নিশ্চিত। এহেন পরিস্থিতিতে নতুন বছর উদযাপনের জন্য কলকাতার রাস্তায় যদি ফের ‘বড়দিনে পার্কস্ট্রিট’-এর মতো চিত্র দেখা যায়, তাহলে আরও কয়েকগুণ বেশি গতিতে বাড়তে পারে সংক্রমণের হার। অন্তত তেমনটাই মনে করছে চিকিৎসকমহল। সেজন্য বর্ষশেষের রাত্রে সমস্ত নগরবাসীকে হই-হুল্লোড়, পার্টি, রাস্তায় নেমে উদযাপন বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই নিজের আসল রুপ প্রকাশ করে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন। সারা দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই হাজার ছুঁই ছুঁই। পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা ১১। দেশের রাজধানীতে রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো ছুটছে ওমিক্রন। তবে গায়ে কাঁটা দেওয়া এসব তথ্যেও কোনও হেলদোল নেই বাঙালীর। বড়দিনের রাত্রে পার্কস্ট্রিটের রাস্তা মনে করিয়ে দিয়েছিল দুর্গানবমীর রাতের কথা। আর তাতেই আশঙ্কার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসকেরা।
এবিষয়ে শহরের এক প্রবীণ চিকিৎসক জানিয়েছেন, “বহু মানুষের কো-মর্বিডিটি রয়েছে। রাজ্যে শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যাও প্রচুর। আমাদের মাথায় রাখতে হবে অক্সিজেনের জোগান কিন্তু অফুরন্ত নয়। প্রতিটি হাসপাতালের বেড যেদিন ভর্তি হয়ে যাবে, স্বাভাবিক নিয়মেই বিপদ ঘনাবে”। এসব কথা মাথায় রেখেই আসন্ন বর্ষবরণের রাত্রে সেলিব্রেশন বন্ধ রাখার পক্ষেই সওয়াল করেছেন তিনি। অন্য এক চিকিৎসকের কথায়, মানুষকে সতর্ক হতে হবে। তা না হলে মুশকিল। এই শীতই অন্তিম শীত হতে পারে।
উল্লেখ্য, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন তার মিউটেশন (mutation) ক্ষমতার জন্য কুখ্যাত। যেখানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (Delta Variant) তার রিসেপ্টর বাইন্ডিং ডোমেনে (receptor binding domain) মাত্র দু’বার মিউটেটেড হয়েছিল, সেখানে ওমিক্রনের মিউটেশন হওয়ার সংখ্যা ১০ বার। পাশাপাশি ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনের (spike protein) জিনগত কাঠামোতেও বদল এসেছে ৩২ বার। নিজেকে ভেঙেচুরে বারবার নতুন অবতারে প্রকট হচ্ছে ভাইরাসের ওমিক্রন স্ট্রেন। তারউপর আক্রান্ত ব্যক্তি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের শিকার কিনা, সে বিষয়েও শনাক্তকরনে চলে যাচ্ছে বেশ কিছু সময়। যার মধ্যে আরও দ্রুতগতিতে এক বাহক থেকে অন্য বাহকে ছড়িয়ে পড়ছে এটি। সব মিলিয়ে বছর শেষে নতুন আতঙ্কের নাম ওমিক্রন।