পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বাংলায় নিজের শিবিরের মাটি শক্ত করতে একের পর এক সভায় উপস্থিত হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। এবারের ভোটে জিতলে আখেরে রাজ্যবাসী ঠিক কতখানি সুদিনের মুখ দেখবে তা নিয়ে বক্তব্য রাখার আগেই রাজ্যবাসী তৃণমূলের জন্য ঠিক কতখানি দূর্দিনের মুখ দেখেছে তার পরিসংখ্যান তুলে ধরতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দিদি ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য তোষণ করে চলেছেন। দিদি বেকার যুবক-যুবতীদের ১০ বছর কেড়ে নিয়েছেন। দিদির পাঠশালা হল নির্মমতা, কাটমানি, সিন্ডিকেটের। দিদির পাঠশালায় অরাজকতার শিক্ষা দেওয়া হয়।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন আরও বলেন, "আপনারা কংগ্রেস, বাম, তৃণমূলকে দেখেছেন। একবার আশীর্বাদ দিন, আসল পরিবর্তন আনবে বিজেপি। আপনাদের অসুবিধা দূর করতে দিনরাত পরিশ্রম করব। আদিবাসীদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা করব। কৃষি ও শিক্ষার উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।"
এদিনের সভা থেকে '১৩০ জন' নিহত বিজেপি কর্মীর কথা বাংলার মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।পাশাপাশি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আমাদের সৌভাগ্য দিলীপ ঘোষের মতো নেতা পেয়েছি। দিদির হুমকিতে ভয় পাননি দিলীপ। ভয়, হামলা সত্ত্বেও মাটি কামড়ে পড়ে আছেন।"
একের পর এক দলীয় বক্তব্যের মাঝেও তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। একের পর এক কটাক্ষের মাঝে 'খেলা হবে' প্রসঙ্গে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, "দিদি বলছেন খেলা হবে, কিন্তু বাংলা বলছে খেলা শেষ হবে। এবার খেলা শেষ হবে, উন্নয়ন শুরু হবে। দিদির কাছে হিসেব চাইলে, শুনতে পান না। আমফানের হিসেব চাইলে দিদি রেগে যান। প্রতিবাদ করলেই জেলে ভরে দেন। কেন্দ্রের প্রকল্প রাজ্যে প্রণয়ন করতে দিচ্ছেন না দিদি। বাংলায় দিদি ভোটারদের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। কিন্তু এবার দিদিকে গণতন্ত্র হত্যা করতে দেব না। পুলিশ প্রশাসনকে বুঝতে হবে গণতন্ত্রের থেকে কিছু বড় নয়। আপনারা এবার আশ্বস্ত থাকুন, এবার নির্ভয়ে ভোট দিন।"
এখানেই শেষ নয়, বাংলাতেও ৫০-৫৫ বছর ধরে উন্নতি হোয়াটসঅ্যাপের মত আটকে রয়েছে, বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর শাসনকালের বিরোধীতা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দিদির পাঠশালায় অরাজকতার শিক্ষা দেওয়া হয়। দেশে প্রায় ৩৫ বছর পর নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন হয়েছে। গোটা দেশে এই নতুন শিক্ষানীতির প্রশংসা করা হচ্ছে। স্থানীয় ভাষায় লেখাপড়ায় জোর দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই গরিবের সন্তানও ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হোক। কিন্তু ভাষার জন্য তাঁদের স্বপ্ন ভেঙে যায়। কিন্তু দিদি তারও বিরোধিতা করছেন। দিদির সরকার নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নে বাধা দিচ্ছেন। দিদির পাঠশালা হল নির্মমতা, কাটমানি, সিন্ডিকেটের।"
অন্যদিকে অবৈধ বালি খননের কথা প্রসঙ্গে মোদী বলেন, "বাংলায় এখন মাফিয়া উদ্যোগ চলছে। কংসাবতী নদীর অবৈধ বালি খনন কার সঙ্গে যুক্ত সবাই জানে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ হবে।"
তৃণমূলের ওপর তোপ দাগার পর প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রথম আই আই টি থেকে ভারতীয় রেল-এ খড়্গপুরের মানুষের বিশেষ অবদানের প্রসঙ্গ তুলে এনে খড়গপুরকে 'মিনি ভারত' আখ্যা দিয়ে সেখানকার মানুষের মন জিততে চাইতেই শ্লোগান ওঠে 'জয় শ্রী রাম'।