বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দফায় দফায় বাংলায় জনসভায় করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগেও জনসভায় মোদীকে দেখা গেছে। এদিন বেলা ১০.৪০ মিনিটে অন্ডাল বিমানবন্দরে নামে প্রধানমন্ত্রীর বিমান।তবে শেষবার ব্রিগেড সমাবেশের রেশ না কাটতেই প্রথম দফার ভোটপ্রচারে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার ভাঙড়ায় নবকুঞ্চের মাঠে পৌঁছালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।ব্রিগেড সমাবেশের ১১ দিনের মাথায় ফের রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে এলেন প্রধানমন্ত্রী।
সভার শুরুতেই মঞ্চে উঠে বিজেপির ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যদের সম্মান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, "দেশের সেনাদের বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন। পুলওয়ামা হামলার পর কার সঙ্গে মমতা ছিলেন, সবাই জানেন। বাটলা হাউস এনকাউন্টারে জঙ্গির গুলিতে মৃত্যু হয় জওয়ানের। তখন এনকাউন্টারের সমালোচনা করেছিলেন মমতা।"
এরপরেই শুরু মোদীর আসল বক্তব্য, শাসকদল তৃণমূলকে তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "বাংলার প্রশাসনকে বলব গণতন্ত্র যেন বজায় থাকে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনা হবে। ২ মে দিদি যাচ্ছে, আসল পরিবর্তন আসছে। এই বার ভয় নয়, শুধু জয়।"
মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে মোদী আরও বলেন, "বাংলার দলিত, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া মানুষকে সঙ্গে নেননি মমতা। আমফানের জন্য কেন্দ্রীয় সাহায্যেও কাটমানি। আদিবাসীদের কল্যাণে সচেষ্ট কেন্দ্র। অটল সরকার আদিবাসীদের কল্যাণে আলাদা মন্ত্রক বানিয়েছিল। বাংলায় দলিত, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া ৩৬ লক্ষ মানুষ উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাস পেয়েছে। কেন্দ্রের ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার আর দিদির বাংলায় টিএমসি মানে ট্রান্সফার মাই কমিশন। জনধন অ্যাকাউন্ট নিয়েও ভয় পান মমতা। চুরির খেলা চলবে না। তোষণের রাজনীতির এটা বড় পরিবর্তন। বাংলায় অনুপ্রবেশের পিছনে একটাই রাজনীতি তোষণ। লোকসভায় তৃণমূল হাফ, বিধানসভায় পুরো সাফ।"
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই নন্দীগ্রামে মনোনয়নপত্র পেশ করার দিনেই আহত হয়ে এসএসকেএমে ভর্তি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেই তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, বিরোধীদলের পরিকল্পনাতেই চোট পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আর সেই মতোনই তৃণমূলের বহু শীর্ষ নেতা বেশ কটাক্ষের সুরেই বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী কেমন আছেন সে খবর নেয়নি কেন্দ্র। আর সেই দোষ ঢাকতেই কিছুটা আক্রমণের মোড়কে মুড়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, "দিদি আমার ওপর রাগ দেখাচ্ছেন। বিজেপি নেতাদের ওপর রাগ দেখাচ্ছেন দিদি। দিদিও ভারতের মেয়ে, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা আছে। দিদির চোট লেগেছে, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন দিদি।"
এদিন প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক মঞ্চে দেখা মিলেছে বিজেপির রাঢ়বঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, এবং পুরুলিয়ায় বিজেপির ৯ জন প্রার্থী।