অনেকেই অভিযোগ করেন, নতুন প্রজন্ম গল্প শোনে না, গল্প পড়ে না! এমনকী প্রাণ খুলে আড্ডা, গল্প তো বহুদূরের কথা। দিনরাত কেবল ছোট্ট একটা মোবাইল কিংবা কম্পিউটার স্ক্রিনের মধ্যেই তাদের দিন গুজরান। মন-প্রাণ খুলে কথা বলতেই ভুলে যাচ্ছে আধুনিক প্রজন্ম। কেবল এই রাজ্য নয়, গোটা দেশেই ক্রমশ বাড়ছে আত্মহত্যাপ্রবণতা, বাড়ছে মানসিক রোগ। অধিকাংশ মনোবিদ বলছেন, আনুষঙ্গিক কারণ তো আছেই, তার সঙ্গে নতুন প্রজন্মের কচিকাঁচারা গল্প করতে ভুলে যাচ্ছে, মাঠে খেলতে যেতে ভুলে যাচ্ছে। যা আগামী দিনে গোটা বিশ্বেই অনেক বড় সংকট ডেকে আনতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন বক্তৃতায় কিংবা অনুষ্ঠানে শৈশবের এই সমস্যার কথা তুলে ধরেন। কীভাবে আধুনিক প্রজন্ম শৈশব ভুলে যাচ্ছে, সেসবের কথা জানান তিনি। হ্যাঁ, এবার এই আধুনিক প্রজন্মকে গল্প শোনাবেন একদল প্রবীণ মানুষ। সমাজ-সংসার থেকে সঞ্চিত বিস্তর জীবন-অভিজ্ঞতার কথা কচিকাঁচাদের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন তাঁরা। যারা গল্প শুনতে কিংবা গল্প করতে ভুলে যাচ্ছে, তাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখানোর কাজ করবেন এই মানুষগুলি।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন প্রকল্প 'আনন্দধারা'। যেখানে বসবে 'গল্প দাদুর আসর'। দাদু-দিদাদের ক্লাবে যোগ দেবে এলাকার ছোটরা। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দু'দিন প্রায় ঘন্টা দুয়েক কেবল জমাটি আড্ডা, হাসি, খোসগল্প। প্রবীণদের সঙ্গে এই আনন্দ ভাগ করে নেবে ছোটরা। ছেলেরা তাদের মনের কথা বলবে, তাদের আনন্দ, দুঃখ, সফলতা, ব্যর্থতা ভাগ করে নেবে দাদু-দিদাদের সঙ্গে। যেসব কথা বাড়ির বাবা-মায়ের সঙ্গে বলা যায় না, অনায়াসে তা বলা যাবে দাদু-দিদাদের ক্লাবে।
কীভাবে চলবে এই নতুন উদ্যোগ? সূত্রের খবর, রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোকে কাজে লাগানো হবে। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দু'দিন নির্দিষ্ট স্থানে বসবে এই গল্পদাদুর আসর। যাঁরা গল্প শোনাবেন, তাঁদের আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এই কাজে রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে হেল্প এজ ইন্ডিয়া। নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দফতরের পরিকাঠামো দিয়ে এই প্রকল্পের কাজ চলবে।