রাজ্যে গত কয়েক মাসে বেশ কিছু হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। যা নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য-রাজনীতি। এবার সেই প্রসঙ্গেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চিঠি দিলেন বাংলার বিশিষ্টজনেরা। মোট ২২ জনের স্বাক্ষর রয়েছে সেই চিঠিতে। বিশিষ্টজনদের মধ্যে আছেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় (Dhritiman chatterjee), অপর্ণা সেন (Aparna Sen), পরমব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (Parambrata Chatterjee), শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায় (Srijato Bandyopadhyay), সুমন মুখোপাধ্যায় (Suman Mukhopadhyay), কৌশিক সেন (Koushik Sen), রূপম ইসলাম (Rupam Islam), অনুপম রায় (Anupam Roy), ঋদ্ধি সেন (Riddhi Sen), সোহিনী সরকার (Sohini Sarkar), অনির্বাণ চক্রবর্তী (Anirban Chakraborty), রূপসা দাশগুপ্ত (Rupsa Dasgupta), গৌরব চক্রবর্তী (Gourav Chakraborty), বোলান গঙ্গোপাধ্যায়েরা (Bolan Ganguly) প্রমুখ।
কিছুদিন আগে হাওড়ার আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খান (Anish Khan) হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি তুমুল অশান্ত হয়ে উঠেছিল। তারপর পূর্ব বর্ধমানের তুহিনা খাতুনের আত্মহত্যা বা ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর ও পানিহাটিতে তৃণমূল কাউন্সিলরের খুন অশান্ত আগুনে ঘিয়ের কাজ করেছিল। কিছুদিন আগে বীরভূমের বগটুই (Bogtui) গ্রামে কয়েকটি বাড়িতে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে অগ্নিসংযোগের কারণে সরকারি হিসেবে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের পুরভোটে অশান্তি এবং বিভিন্ন জায়গায় অগণতান্ত্রিক উপায়ে ভোটগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। একের পর এক রাজ্যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটায় সেই নিয়ে এবার চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছেন বেশ কিছু বিশিষ্টজন।
বগটুই কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশ এবং তৃণমূল সরকারের দোষ দেখা শুরু করেছে বিরোধীরা। অন্যদিকে এর মধ্যেই শুরু হয়েছে তদন্ত প্রক্রিয়া এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে চিঠিতে বাংলার বিশিষ্টজনেরা লিখেছেন, "এরকম ঘটনার আগে পুলিশ প্রশাসন তৎপর বা সক্রিয় হল না কেন? হলে হয়তো বাংলায় আরো একটি ঘৃণ্য রাজনৈতিক হিংসার নিদর্শন দেখা যেত না"।
তবে হঠাৎ করেই কেন এমন চিঠি দিলেন বিশিষ্টজনেরা? এই প্রসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, "আমরা সকলেই এই সমাজের একটি অংশ এবং বাংলার নাগরিক। তাই আমাদের বিবেচনামত পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনাগুলিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছি। এর আগেও আমরা অনেকেই আমাদের ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেছিলাম। এবার সকলে একত্রিত হয়ে বাংলাকে সুস্থ করে তোলার জন্য মাননীয়াকে চিঠি পাঠালাম। আশা করি শাসকদল এবং প্রশাসন আমাদের মতামতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে"।
এছাড়া আগামী ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে হয়, সেইদিক সুনিশ্চিত করতে অনুরোধ জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁরা চিঠিতে লিখেছেন, "২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এর আগে ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত জায়গায় অশান্তির খবর সামনে এসেছিল এবং বিরোধীদের গলার স্বর উঁচু হয়েছিল। সেইসব ঘটনা যতই অস্বীকার করা হোক না কেন, তা কিছু পরিমাণ তো অবশ্যই সত্য ছিল। তাই সেই ঘটনার যাতে না পুনরাবৃত্তি ঘটে তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে রাজ্যের শাসকদল এবং প্রশাসনকে"।