জোকা ইএসআই হাসপাতাল থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) জুতো ছুঁড়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাধারণ গৃহবধূ শুভ্রা ঘোড়ুই। ঘটনার পর থেকেই তিনি রাজ্য-রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তাঁর পক্ষ নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট করেছিলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। এবার শুভ্রা ঘোড়ুইয়ের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এক খোলা চিঠিতে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা স্পষ্ট দাবি করেছেন, "শুভ্রা (ঘোড়ুই) দেবীকেও ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে দেওয়ার অনুরোধ জানাই।" তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য পশ্চিমবঙ্গবাসীর পক্ষ থেকে খোলা চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে নিজের বক্তব্য পরিষ্কার ভাবে ব্যক্ত করেছেন।
তাঁর এমন মন্তব্যের কারণ কী? দিন কয়েক আগে তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় তাঁর নামে সরাসরি অভিযোগ উঠেছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এরপর বিরোধীদের তরফে স্পষ্ট দাবি উঠেছিল, এমন মানুষের নাম ইতিহাস বইতে থাকে কীভাবে? বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা দাবি করেছিলেন, পাঠ্য বই থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম সরানো হোক। এ নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। তবে গতকালের ঘটনার পর তিনি ফের চাঞ্চল্যকর দাবি তুললেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে লিখলেন খোলা চিঠি।
কী ছিল চিঠিতে? অনুপম হাজরা বলেছেন, "কয়েকদিন আগে আমি অনুরোধ করেছিলাম পার্থ চ্যাটার্জির নাম ইতিহাস বইয়ের পাতা থেকে মুছে দিতে আর আজ আমিই আপনাকে অনুরোধ করছি ইতিহাসের পাতায় উনাকে স্থান দেওয়ার জন্য - কারণ পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত উনিই প্রথম এবং একমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সর্বোপরি প্রাক্তন মন্ত্রী - যিনি প্রকাশ্য দিবালোকে 'জনগণের কাছ থেকে জনসমক্ষে জুতো খেয়েছেন'; এ এক অনন্য নজির !!!"
এখানেই শেষ নয়, এমন পোস্টের ঘন্টা দুয়েক পরে তিনি ফের একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। স্পষ্ট বলেছেন, "চটি সবাই চাটে না! কেউ কেউ ছুঁড়েও মারে।" রাজনৈতিক মহলের অভিমত, এই বক্তব্যে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা নিজের দিকেই ইঙ্গিত করলেন কি? কারণ একসময় তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। নাম লিখিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। তার পরেই শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তিনি বারবার একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। কখনও মাথা নত করেননি অনুপম হাজরা, এমন কথা বলতে শোনা যায় তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে। এই পোস্টের মাধ্যমে হয়তো নিজের পূর্ব রাজনৈতিক পরিচিতির গোড়ায় ঘা দিলেন, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।