শৈশব থেকে কৈশোরে পা রাখার সময়টা যে শুধুমাত্র মেয়েদের সমস্যা হয়, তা কিন্তু নয়। এই একই সময়ে নানান ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয় ছেলেরাও। আর সেই সব সমস্যা অনেক সময় সৃষ্টি করে সামাজিক জটিলতা। বাল্যবিবাহ রোধ থেকে শুরু করে মেয়েদের সচেতন করার জন্য একাধিক কন্যাশ্রী ক্লাব (Kanyashree Club) তৈরি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটি স্কুলে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ছেলেদের জন্য তেমনভাবে কোন ক্লাব নেই। তাই এবারে ছেলেদের বয়সন্ধিকালে সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটি স্কুলে তৈরি করা হচ্ছে বয়েজ ক্লাব। ছেলেদের মানসিক স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে পরিবেশ, নিয়মানুবর্তিতা নীতি এবং আরো অন্যান্য বিষয় নিয়ে এই বয়েজ ক্লাব কাজ করবে। বন্ধু মহল, বান্ধব ইত্যাদি নামে পরিচিত হবে ওই সমস্ত বয়েজ ক্লাব।
সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ওই জেলার বিভিন্ন স্কুলে এই বয়েজ ক্লাব তৈরি করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রেরখবর। প্রধান শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট চিঠি তাঁরা ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছেন। এলাকার জেলা স্কুল পরিদর্শকেরা ইতিমধ্যেই তাঁদেরকে ই-মেইল করে ওই চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই সমস্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই নির্দিষ্ট বয়েজ ক্লাবের নাম দেওয়া হোক 'বন্ধু মহল'। এই ক্লাবে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র প্রতিনিধিরা থাকবেন। এদের মধ্যে একজন হবেন ক্লাবের প্রধান এবং অন্য একজন হবেন উপপ্রধান। পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি দেখভাল করবে এই ক্লাবের এক সদস্য। কেউ দেখবে পরিবেশ, আবার কারোর উপরে দায়িত্ব থাকবে নিয়মানুবর্তিতা রক্ষার। কেউ আবার নজর দেবে সামাজিক বিষয় নিয়ে। তবে সব থেকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ছেলেদের বয়সন্ধিকালের সমস্যার উপরে।
কোন মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে না এলে সে কেন আসছে না সেটা খোঁজ নিতে যায় কন্যাশ্রী ক্লাব। একইভাবে যদি ছেলেরা দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে না আসে তার খোঁজ করবে 'বন্ধু মহল'। ওয়াকিবহাল মহল বলছেন, প্রতিটি জেলার সব স্কুলেই এমন ক্লাব তৈরি হলে আশা করা যেতে পারে বয়সন্ধিকালের সমস্যাগুলি সহজেই দূর করা সম্ভব হবে। একজন সরকারি স্কুলের শিক্ষক বলছেন, স্কুলে ইতিমধ্যেই অষ্টম থেকে দ্বাদশের ছাত্রদের নিয়ে বান্ধব নামের একটি ক্লাব চালু হয়েছে। ক্লাব অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। কমাতে পারে মোবাইল আসক্তি। এই বয়সে পড়ুয়ারা নানা সমস্যায় ভোগেন। বন্ধু মহল সেই সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা নেবে, আশা করাই যায়।