হাসপাতালে ঢুকে কাজ শুরুর আগে জানাতে হবে সুপারকে। কাজের সময় ডাক্তারবাবু কোথায় আছেন? হোয়াটসঅ্যাপে লোকেশন শেয়ার করতে হবে, হ্যাঁ এমনই নির্দেশ দিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ! এহেন নোটিস জারি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে। আর কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ডাক্তাররা মনে করছেন এমন গাইডলাইন জারি করে তাঁদের অবমাননা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্বৈরাচারী রাজ চালানোর অভিযোগও তুলছেন স্বাস্থ্যসেবায় নিযুক্ত কর্মীবৃন্দরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের অন্তত ৪০ ঘণ্টা উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গত সপ্তাহে নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেই নির্দেশিকার সূত্র ধরে সোমবার এই নির্দেশিকা জারি করল বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়েছে, বহির্বিভাগ, ওটি, অন কল পরিষেবা, ইমার্জেন্সি, এইচডিইউ, এসএসসিইউয়ে কর্মরত মেডিক্যাল অফিসারদের কাজে যোগ দেওয়ার সময় লোকেশন শেয়ার করতে হবে। কোন তিনটি নম্বরে পাঠাতে হবে তাও উল্লেখ করা হয়েছে নোটিসে। এরমধ্যে একটি নম্বর স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ মলহেন নির্দেশিকা ঘিরে জোর চর্চা চলছে চিকিৎসক মহলে।
এপ্রসঙ্গে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার চিফ মেডিক্যাল অফিসার অব হেলথ্ (সিএমওএইচ) মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, "একটি প্রতিলিপি আমি পেয়েছি। সম্পূর্ণ বিষয় খোঁজ নিচ্ছি। সুপারের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।" চিকিৎসক সংগঠন সার্ভিস ডক্টর ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের কথায়, "এই নোটিস মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। অবিলম্বে এমন নোটিস প্রত্যাহার করা উচিত। চিকিৎসক কেন, কোনও পেশাতেই এমন নির্দেশিকা দেওয়া যায় না।"
তবে এর পাল্টা যুক্তি দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তাঁরা জানিয়েছন, রাজ্যে যখন কোভিড পরিস্থিতি চলছিল, তখন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলির আউটডোর পরিষেবার ক্ষেত্রে একাধিকবার রোগীদের নাজেহাল হতে দেখা গিয়েছে। আউটডোর খোলা থাকলেও দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যায়নি। আর এজন্যই করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিয়ে কড়াকড়ি করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। তবে যেভাবে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দেশিকা জারি করে হোয়াটসঅ্যাপে লোকেশন শেয়ার করার কথা বলেছে, তা নিয়ে এক বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে।