বঙ্গ বিজেপি না তাসের ঘর, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে তা আন্দাজ করা বড়ই দুষ্কর। দলবদলের হিড়িক লেগেছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। ’২১এর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপির অবস্থা শোচনীয়। যে আশা নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বারবার ছুটে এসেছিলেন এরাজ্যে, সেই আশা হতাশায় পরিনত হওয়ায় বিজেপির ঘরের লোকেদের গলাতেই আজ উল্টো সুর। তাই তাঁদের অধিকাংশই এখন ‘সুনার বঙ্গাল’-এর স্বপ্ন ত্যাগ করে একে একে ফিরে যাচ্ছে তৃণমূলে-সিপিএমে! সেই তালিকা দীর্ঘ করে মঙ্গলবার তৃণমূলের হাত ধরলেন বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস।
বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিভিন্ন জনসভায় বারবার ২০০র বেশি সিটে জিত হাসিলের দাবী করেছিলেন। যদিও বাস্তবে বিজেপির গাড়ি থেমে গেছিল ৭৭-এ। কিন্তু তারপরেও বিধায়কদের দলবদলের জেরে বর্তমানে এরাজ্যে বিজেপি বিধায়কের সংখ্যা নেমে এসেছে ৭৪-এ। উল্লেখ্য, গতকালই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। ক্যামাক স্ট্রিটের তৃণমূল কার্যালয়ে ব্রাত্য বসুর হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নিয়ে তিনি বাকি বিজেপি নেতা-নেত্রীদেরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কর্মযজ্ঞে’ সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই আবার ধাক্কা বঙ্গ বিজেপিতে।
দুবার তৃণমূলের তরফ থেকে জিতে আসা উত্তর বনগাঁর তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, মুকুল রায়ের পদানুসরন করে ছেড়েছিলেন তৃণমূল। যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। যদিও বিজেপিতে যোগ দিয়েও সেই স্মৃতি খুব একটা সুখকর হয়নি বিশ্বজিতের। বনগাঁ উত্তরের বর্তমান বিজেপি বিধায়ক শান্তনু ঠাকুরের সাথে তাঁর মতানৈক্য শুরু হয়। যার জেরে দুবার বনগাঁ উত্তর থেকে জিতে বিধায়ক হয়ে আসা বিশ্বজিৎ দাসকে লড়াই করতে হয় বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রে। তার উপর বিধানসভা উপনির্বাচনের পর মুকুল রায়ের দলবদলে বিশ্বজিতের দলবদলের জল্পনা আরও তুঙ্গে ওঠে। সেই জল্পনাকে সত্যি করে মঙ্গলবার ফের ‘ঘরওয়াপাসি’।
পুরনো দলে ফিরেই এদিন মুখ খুলেছেন বিশ্বজিৎ। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপির সাথে কাজ করে তিনি অসুখী ছিলেন। সাথে নিজ ভুল স্বীকারও করেন তিনি এদিন। তবে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ থেকে ৭৪-এ নেমে এলেও তাঁরা এতে পাত্তা দিতে নারাজ। তাঁদের মতে, রাজনীতিতে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। যদিও তৃণমূল সুত্রের খবর, এখানেই শেষ নয়, আরও অনেক বিজেপি বিধায়ক কার্যত লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তৃণমূলের হাত ধরবেন বলে!