আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে হেনস্থা করার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই তেতে উঠেছে রাজনৈতিক মহল। এর মাঝেই একবার এই ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করে বিষয়টি আবারও মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার নবান্ন থেকে একটি সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "পুলিশ যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ে নিয়েছে। যারা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করে তারা সকলেই ভালো। সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু তবুও যে একটু কটু কথা বলেছে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আমাদের এখানকার পুলিশ দরকার পড়লে ব্যবস্থা নিতে জানে।" ইতিমধ্যেই উপাচার্যকে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত গিয়াসউদ্দিন মন্ডলকে বারাসত আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। তাকে সাত দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ছাত্রদের হাতে নিগৃহীত উপাচার্য মহম্মদ আলী (Mohammad Ali) আর আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ফিরে যেতে চান না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। পরিবর্তে যাদবপুরের রসায়ন বিভাগে ফিরে যেতে চান ওই অধ্যাপক। রাজ্যপাল তথা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনকর (Jagdeep Dhankhar) এবং শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) কে ইতিমধ্যেই নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি যখন নিজের ইচ্ছার কথা জানাচ্ছেন সেই সময় তার ন্যায় বিচারের দাবি নিয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীরা অবস্থান-বিক্ষোভে বসে। তাদের দাবি ছিল, উপাচার্যকে নিগ্রহের পিছনে যতজন জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের অধীনে। সেই দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বললেন, "আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দপ্তরের অধীনে, অথচ আমাদের এখনো পর্যন্ত কেউ রিপোর্ট করেনি। আমার সেক্রেটারিকেও কেউ কিছু জানাননি। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা দেখছি তা অত্যন্ত নিন্দনীয় বিষয়। আগামী ৬ এপ্রিল ডিপার্টমেন্টে মিটিং ডাকা হয়েছে এই ঘটনা নিয়ে।"
উল্লেখ্য, বছর চারেক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। চলতি মাসে তার মেয়াদ শেষ হবার কথা। সোমবার পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির খবর মেলেনি। কিন্তু উপাচার্য এদিন তার প্রতি হওয়া এই অত্যাচারের ঘটনা সকলের সামনে নিয়ে এসেছেন। তিনি আর্জি রেখেছেন যেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের তিনি আবারও ফিরে যেতে পারেন। তিনি বলছেন, "একজন শিক্ষক হিসেবে ছাত্রের কাছে অপমানিত হওয়া যে কত কষ্টের তা বলে বোঝাতে পারবো না। বারবার মনে হচ্ছে আমি কি ব্যর্থ হলাম? এত কটু কথা শোনার পরে আমি আর ওখানে ফিরতে চাই না। যেখানে সম্মান নেই সেখানে ফিরে যাব না। যাদবপুরের উপাচার্যের সঙ্গে কথা হয়ে গেছে। আমি আবারও পুরনো জায়গায় ফিরে যাব।"