পেটের টানে ঘরের ছেলেরা গিয়েছিল আফগানিস্তানে। কিন্তু সেখানের বর্তমান পরিস্থিতি সব হিসাব গুলিয়ে দিয়েছে গোপালনগরের চার পরিবারের। এখন ঘরের ছেলেরা ঘরে ফিরে আসার আশাতেই চাতকের মতো দিন গুনছেন চারটি পরিবারের বাসিন্দারা। যদিও গত সপ্তাহ থেকেই পরিবারের কাছে খোঁজ নেই কাবুলের হোটেলে কর্মরত চার যুবকের। এহেন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার গোপালনগর থানার দ্বারস্থ তাঁরা। এদিন থানাতে ছেলেদের পরিচয়পত্র নিয়ে এসে সাহায্যের কাতর আর্তি তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ঘরের ছেলেদের ঘরে ফেরানোর বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আর্জিও জানান এদিন যুবকদের পরিবার।
উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার পাল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের চার যুবক এখনও আটকে কাবুলে। তাঁদের মধ্যে জয়ন্ত বিশ্বাস, বিদ্যুৎ বিশ্বাস এবং পলাশ সরকারের বাড়ি রামশঙ্করপুরে। রঘুনাথপুরে বাড়ি প্রবীর সরকারের। কিছু বছর আগেই বাড়তি উপার্জনের আশায় কাবুলের একটি হোটেলে কাজ নেন তাঁরা। কিন্তু নিয়তির পরিহাস! তালিবানেরা আবার ফিরে এসেছে আফগানিস্তানে। দখল করে নিয়েছে কাবুল-ও। শুধু দখলই নয়, ভয়ঙ্কর অত্যাচারও শুরু করেছে তারা সেখানের নাগরিকদের উপর। তাই যুবকদের পরিবারের বাসিন্দারা দেখছেন সিঁদুরে মেঘ। তার উপর সাতদিন ধরে ছেলেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পারায় স্বভাবতই তাঁদের চিন্তা আরও কয়েক গুন বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতেই তাঁরা এহেন আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।
যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, রাজ্যের সে সমস্ত বাসিন্দারা আফগানিস্তানে আটকে আছে, তাঁদের যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যে ফেরানোর প্রস্তুতি গ্রহন করেছে রাজ্য সরকার। তবে এদিন ঐ চার পরিবারের বাসিন্দাদের একেবারে খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়নি প্রশাসন। ঘটনার পরেই গোপালনগর থানার পুলিশ আধিকারিক চিন্তামণি নস্কর এবং পাল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নিশীথ বালা তাঁদের বাড়ি যান এবং ছেলেদের ঘরে ফেরানোর আশ্বাস দেন। নিশীথবাবুর কথায়, কাবুলে ভারতীয় বিমান পাওয়া যাচ্ছে না বলেই সেখানে আটকে রয়েছেন চার যুবক। তিনি আরও বলেন, তাঁরা সকলেই মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য প্রশাসনের কাছে গ্রামের ছেলেদের ফিরিয়ে আনার আর্জি জানিয়েছেন।