বাবা-মা ও চার ভাই-বোনের সংসার। বাবা-মা পেশায় কাগজকুড়ানি। প্রত্যেক দিন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কাগজ, ভাঙা জিনিসপত্র কুড়িয়ে তাঁদের দিন গুজরান হয়। তবে দিনের শেষে ফুটপাথ লাগোয়া এক চিলতে ঘরে ফিরে আসে সবাই। ফেরার পথে 'গোলাপচারা' কিনে আনতে না পারলেও রোজ দিনের খাবারটুকু জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। এদিকে দিদির শরীরটাও ভালো নেই। যেভাবে হোক ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ কিনতে গিয়ে নিজের বছর তিনেকের ছোট ভাইয়ের যে এমন মর্মান্তিক পরণতি হবে কে তা জানত!
ঘটনাটি তপসিয়া রোডের প্রগতি ময়দান থানা এলাকার। গতকাল সন্ধ্যায় পেছন থেকে এক পিক-আপ ভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ গেল এক বছর তিনেকের শিশুর। এমন মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল আমজনতা। এলাকার পরিস্থিতি অচিরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে ঘাতক পিক-আপ ভ্যানটিকে ধরা সম্ভব হয়নি। মৃত শিশুটির নাম শেখ আরিয়ান। বাবা-মায়ের সঙ্গে তপসিয়া এলাকায় থাকত। বাবা-মা কাগজকুড়ানি। চার ভাই-বোনের সংসার। বছর সাতেকের দিদি অসুস্থ। দিদির ওষুধ কিনতে বাবা-মায়ের সঙ্গে বেরিয়েছিল সে। আর সাইকেলে ফেরার সময় পেছন থেকে ধাক্কা মারে পিক-আপ ভ্যানটি। তৎক্ষণাৎ ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায় আরিয়ান। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ এই রুটের গাড়ির গতিবেগ নিয়ন্ত্রণে থাকে না। স্পিড ব্রেকার থাকা সত্ত্বেও কেউ নিয়ম মানছে না। যে কারণে এই বেপরোয়া গতির মাশুল দিতে হল এই একরত্তি শিশুকে। ঘটনার পর পিক-আপ ভ্যানটি বেপাত্তা। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।