প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) আসার আগে প্রতি বছর ২ কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় ফেরার পর বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী জমানায় কর্মসংস্থানের অগ্রগতি তো দূরস্ত, বরং দিন দিন আরও তলানিতে ঠেকেছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে গত এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে সারা দেশে উৎপাদন, নির্মাণ, তথ্যপ্রযুক্তি-সহ ন'টি ক্ষেত্রে (যদিও এই তালিকায় কৃষিক্ষেত্র বাদ ছিল) ৩.০৮ কোটি মানুষ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যা বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানের তুল্যমূল্য বিচারে অতি সামান্য বৃদ্ধি বলছেন ওয়াকিবহাল মহল। একটি পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়েছে গত সাত বছরে এই ক্ষেত্রগুলিতে মাত্র ২৯ শতাংশ কাজের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পেয়েছে। বছরে ৪ শতাংশের একটু বেশি। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসায় বিরোধীদের তোপ বছরে ২ কোটি চাকরির ভাঁওতা প্রকাশ্যে এসেছে। কাজ তো দূরে থাকুক, বরং দিনের পর দিন বিভিন্ন লাভজনক ক্ষেত্র বেসরকারিকরণের ফলে কাজ হারাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় আচমকাই জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যায়। তাতে দেখা গিয়েছিল, ২০১৭-২০১৮ অর্থবর্ষে সারা দেশে বেকারত্বের হার ৬.১ শতাংশ, যা গত সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর সরকারের তরফে অনেক গলদ খুঁজতে লেগে পড়েন একাংশ। যদিও নির্বাচনের পর এই রিপোর্টের সত্যতা ফের প্রকাশ্যে আসে। এরপর কোভিড অতিমারি পরিস্থিতিতে গোটা দেশের বেহাল অর্থনীতির চিত্রটি প্রকাশ্যে এসেছিল। বলা হয়েছিল লকডাউনই এই বেহাল অর্থনীতির জন্য দায়ী। যদিও একাংশ দাবি করেছিলেন, কেবল লকডাউন নয়। কারণ ২০১৭-২০১৮ অর্থবর্ষে তো লকডাউন ছিল না, তাহলে তখন গোটা দেশে বেকারত্বের এমন নগ্নচিত্রটা ধরা পড়ল কীভাবে? সেইসময় বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানিয়েছিলেন, নোট বাতিল-সহ একাধিক মোদী সরকারের 'ভ্রান্ত নীতি' দেশের এমন সার্বিক অবস্থার জন্য দায়ী। কিন্তু সময় গড়ালেও বেকারত্বের এমন করুণ দশা ক্রমবর্ধমান হয়েছে।
কেন্দ্রের শ্রম দফতরের তরফে প্রকাশিত এমন রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতিমারির বিরূপ প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে মহিলাদের উপর। হোটেল, রেঁস্তোরা প্রভৃতি ক্ষেত্রে এর প্রভাব অতি উদ্বেগজনক। এইসব ক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। যদিও এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এই রিপোর্ট যখন তৈরি হয়েছিল, তখন অর্থাৎ মার্চ থেকে জুন সেইসময় গোটা দেশে লকডাউন চলছিল। ফলে এই পরিসংখ্যানের উপর প্রভাব পড়া স্বাভাবিক। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে এ অবস্থার বদল হয়েছে। তবে একথাও ঠিক এই সময়ে স্বাস্থ্য, পরিবহণ, আর্থিক ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।