গোয়ায় গিয়ে বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন গোয়ায় গিয়ে বললেন, বাংলায় সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা মিলছে বিনামূল্যে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, পর্যটন কেন্দ্র হওয়া সত্বেও গোয়াতে কেন কর্মসংস্থান নেই? সরকারি নীতি কোথায় রয়েছে? বাংলায় তার কাজের খতিয়ান তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "নির্বাচন ছাড়া ওরা কিছু বোঝেনা।"
বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা আরো বললেন, "ওরা শুধুমাত্র নির্বাচন বোঝে। আমাদের বাংলায় দেখুন সবকিছু ফ্রি। কিডনি থেকে হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট সবকিছুই বিনামূল্যে করা যায়। স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গাতে পড়াশোনা একদম ফ্রি। হিন্দু মুসলিম, শিখ খ্রিস্টানের মধ্যে কোন তফাৎ নেই। আমরা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের স্মার্ট ফোন দিয়েছি। স্থানীয় প্রায় ২ লক্ষ্য শিল্পীরা মাসে ১ হাজার টাকা করে পেয়ে যাচ্ছেন। কেউ মারা গেলে কিংবা কারো বিবাহ থাকলে তাদের আমরা সাহায্য করে থাকি। মহিলাদের জন্য লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প চালু রয়েছে। ৫০০ টাকা করে সাধারণ মহিলারা এবং ১,০০০ টাকা করে তপশিলি জাতি এবং উপজাতির মহিলারা পাচ্ছেন। আমরা গত মাসে ৫০ হাজারের কাছাকাছি ফুটবল দিয়েছি ক্লাবগুলোকে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলায় রয়েছে। এছাড়াও বাংলায় সর্বমোট ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।" বিজেপি কে কটাক্ষ করে মমতা আরো বললেন, 'বেঙ্গল যা পারে, গোয়া তা পারে না কেন? গোয়া আমাদের দেশে পর্যটনে একদম শীর্ষে। কিন্তু তাও গোয়াতে এত কেন বেকার? কোথায় সরকারি নীতি? কোথায় উদ্ভাবনী শক্তি? যুব সম্প্রদায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইছে। তাই আমাদের সাহায্য করতে হবে তাদেরকে।'
বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "আমরা ডিভাইড এন্ড রুলে বিশ্বাসী নয়। এইদেশ গণতন্ত্রের স্বর্ণখনি। জাভেদ আখতারের সিনেমাকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, কারণ উনি বিজেপি করেন না। আমি মানবতাকে ভালোবাসি। মানবতা মানুষের সঙ্গে মানুষ কে পৃথক করে না। আমি বিশ্বকে দেখাতে চাই, যে যেখানে চায় যেতে পারে, সকলের নিজের পরিচয় নিয়ে যেন গর্বিত থাকতে পারে।" এছাড়াও আজকের সভায় গোয়া নিয়ে তার বিভিন্ন উন্নয়নের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, "বাংলায় যেরকম উন্নয়ন হয়েছে সে রকম উন্নয়ন আমি গোয়ায় করতে চাই। এখানে আমি কয়েকটা দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। গোয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা হয়েছে। গোয়া ভবিষ্যতের স্বর্ণখনি। তাই আমি ভাবলাম গোয়া থেকে শুরু করি। আমরা একসঙ্গে কাজ করবো। আমি ঘন ঘন আসবো। আমাদের দিকে দীঘা আছে, আর আপনাদের এখানে গোয়া। আগেই বলেছিলাম, আমরা দীঘাকে গোয়া করব। আমরা যেরকম ফুটবল ভালোবাসি, আপনারাও ফুটবল ভালোবাসেন। আমরা যে রকম মাছ ভালোবাসি, আপনারাও মাছ ভালোবাসেন। কোথায় তফাৎ? বিষ ছড়াচ্ছে শুধুমাত্র বিজেপি।"