১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ের ৩৯ বছর, কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেটে এক নতুন ইতিহাস রচনার সন্ধিক্ষণ
হার না মানার লড়াই, অদম্য জেদ ও বিশ্বাসের লড়াই, শিখিয়েছিলেন কপিল দেব এবং তাঁর টিম
সালটা ১৯৮৩। ঠিক আজ থেকে ৩৯ বছর আগে। ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। পড়ে পড়ে মার খাওয়া কয়েকজন যুবকের অনবদ্য লড়াই। হার না মানতে শেখা অদম্য জেদ ও বিশ্বাসের লড়াই ছিল আজকের দিনেই।
১৯৮৩ সালের ২৫ জুন, আজকের দিনেই ভারত প্রথম জিতেছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপ। কেউ স্বপ্নে কল্পনাও করতে পারেননি। সেই অসাধ্যকে সাধ্য করেছিলেন কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল। তার আগের দু'টি বিশ্বকাপে গোটা টুর্নামেন্টের মধ্যে ভারত কেবল একটি ম্যাচ জিতেছিল মাত্র। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যারা ৮৩-র আগের দু'টি বিশ্বকাপ অর্থাৎ ১৯৭৫ এবং ১৯৭৯ জিতে ফেলেছেন। ১৯৮৩ জিতলেই হ্যাটট্রিক গড়বেন। সেই তুখোড় দলকে হারিয়ে ভারতের সেই প্রথম ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়। ক্রিকেটের দুনিয়ায় 'আন্ডারডগ' থেকে ক্রমশ সর্বেসর্বা হয়ে ওঠার কাহিনী।
১৯৮৩ সালের ২৫ জুন। ভারত তখন ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালে। প্রতিপক্ষ অপ্রতিরোধ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইতিমধ্যেই যারা আগের দু'টি ওয়ার্ল্ড কাপ জিতে ফেলেছেন। এটা জিতলেই হ্যাটট্রিক। টসে জিতে কপিল দেবের দলকে ব্যাট করতে পাঠালেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড। শুরু থেকেই ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে বিপর্যয়। ভারতের ওপেনার সুনীল গাভাসকার যখন ফিরে গেলেন, তখন স্কোরবোর্ডে মাত্র ২ রান। একে একে উইকেট পতন। ভারতীয় ব্যাটার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত এবং মোহিন্দর অমরনাথ দলের হাল ধরার কিছুটা চেষ্টা করলেও বেশিদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। ৫৪.৪ ওভারে (তখন একদিনের ম্যাচ ৬০ ওভারে হত) মাত্র ১৮৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ভারত।
দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাট করতে নামে। তবে ভারতীয় বোলিংয়ের কাছে পর্যুদস্ত। ভিভ রিচার্ডস ২৮ বলে ৩৩ রানের একটি অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন, সঙ্গে ছিল ৭ টি বাউন্ডারি। তবে ভারতীয় বোলারদের ঝলসে উঠতে দেখা গিয়েছিল। মদনলাল এবং মহিন্দর অমরনাথ একাই ৬ উইকেট পকেটে পুরে নেন। তৈরি হয় ভারতীয় ক্রিকেটের এক নতুন ইতিহাস। বিশ্ব ক্রিকেটে 'আন্ডারডগ' ভারতের শুরু হয় নতুন দাপুটে ইনিংস।
এই জয় কেবল একটা বিশ্বকাপ জয় ছিল না। ভারতের ক্রিকেট সম্পর্কে বিশ্ব ক্রিকেটের দৃষ্টিভঙ্গিই বদলে গিয়েছিল। কপিল দেব এবং তাঁর দল আজ থেকে ঠিক ৩৯ বছর আগে তৈরি করেছিলেন সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের।