ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় যশ, মোকাবিলায় নতুন নির্দেশিকা জারি কলকাতা পুলিশের
কলকাতা পুলিশের বিশেষ বৈঠকে নির্দেশিকা জারি করে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সকলকে
আগামী রবিবার বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে গভীর নিম্নচাপ। আর সেই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আগামী বুধবার ২৬ মে আসছে বাংলার উপকূলে তাণ্ডব করতে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে 'যশ', বাংলা সিনেমার সুপারস্টারের নামের সঙ্গে সাদৃশ্য থাকলেও এই ঝড়টির আসল নামকরণ ওমান ভাষা থেকে। সেই ভাষায় Yaas শব্দটির অর্থ 'হতাশা'। আর এই ঝড় যেভাবে গতি সঞ্চয় করে তেড়ে আসছে, সেই অবস্থায় কিন্তু বেশ চাপেই কলকাতা সহ সারা রাজ্যের পুলিশ। আগের বছরের আম্ফানের স্মৃতি এখনো দগদগে। তার মধ্যেই যদি আবার যশ তান্ডব চালায় তাহলে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকা এবং রাজধানী কলকাতাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আগেরবার কলকাতা পুলিশের কাজ নিয়ে যেরকম প্রশ্ন চিহ্ন উঠেছিল, তার থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারে আরো বেশি তৎপর কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই, এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে একদফা বৈঠক সেরে ফেলা হলো লালবাজারে। বৃহস্পতিবার নগরপাল সৌমেন মিত্রের উপস্থিতিতেই এই বৈঠক করা হল।
কলকাতার সব থানার ওসি এবং ডিসিদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন নতুন আদেশ আরোপিত করা হয়েছে বলেই সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। থানার বড়োকর্তাদের উদ্দেশ্যে উপদেশ - পুরসভা, দমকল, সিইএসসি, এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সব সময় যোগাযোগে থাকতে হবে। থানায় মজুত করতে হবে গাম বুট, বৈদ্যুতিন করাত, বর্ষাতি, হেলমেট সহ আরো বেশ কিছু জিনিস যা বৃষ্টি এবং আনুষঙ্গিক প্রয়োজনে কাজে লাগবে। প্রত্যেক থানা এলাকায় যে সমস্ত কোভিড এবং নন - কোভিড হাসপাতাল আছে, সেগুলির জেনারেটর এবং অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের তদারকির দায়িত্ব এই সময়ে স্থানীয় থানার পুলিশের কাঁধেই দিয়েছেন লালবাজারের আধিকারিকরা। ভার্চুয়াল বৈঠকে আরো জানানো হয়েছে যাতে পুরনো বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার কথা অনুরোধ করা হয়। সিএসসি এবং পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ দপ্তর দুটি সংস্থাকেই তাদের কর্মীদের নিয়ে তৈরি থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে। শহরের সাফাই কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য, পরিষ্কার করতে হবে এলাকার ম্যানহোল, যাতে বৃষ্টির সময় জল নামতে কোন অসুবিধা না হয়। কোথাও যদি বিদ্যুতের তার বিপজ্জনকভাবে বেরিয়ে থাকে তাহলে তা তৎক্ষণাৎ পুরসভার দৃষ্টিগোচরে আনার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও যদি গাছ ভেঙে পড়ে তাহলে পুরসভার ট্রাকের মাধ্যমে যাতে তাড়াতাড়ি গাছটিকে সরিয়ে ফেলা যায় তার পরিকল্পনাও নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। স্পষ্টতই, কলকাতা পুলিশের বর্তমানে সবথেকে বড় লক্ষ্য একটাই, যেন কোনোভাবেই জনজীবন ব্যাহত না হয়।