ঝড়জল উপেক্ষা করে রাতেই কালীঘাটে ধর্ণার পরিকল্পনা, পুলিশের আশ্বাসে প্রত্যাহার
মিলেছে নিয়োগের আশ্বাস, দু-সপ্তাহ কেটে গেলেও নেই সরকারি কোন উদ্যোগ, সময় অতিক্রান্ত হলেই বড়সড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
বাইরে তখন ঝড়জলের রাত। বজ্রবিদ্যুতের দাপটে শহরের বুকে নেমেছে একরাশ শূন্যতা। কুছ পরোয়া নেই! গতকাল শহরের বুকে গভীর রাতে তেমনই দেখা গেল একদল এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীর 'বেপরোয়া' মনোভাব। নিজেদের হকের চাকরি আদায় করে নিতে প্রকৃতির দাপট উপেক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে। যদিও পুলিশের কথায় এবং তাঁদের আশ্বাসে তাঁরা ফিরে আসেন, তারপরও সেই লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন একাংশ।
এসএলএসটির (SLST) শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা গত ৩৭ দিন ধরে শহিদ মিনারের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। শনিবার রাতে আচমকাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পরিকল্পনা করে তাঁরা। পরিস্থিতি আঁচ করেই ধর্মতলা চত্বরে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। মাঠে নামেন কলকাতা পুলিশ ডিসি সাউথ আকাশ মগারিয়া। তিনি সরাসরি এসে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর আশ্বাস পেয়ে সেই ঝড়জলের রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত তাঁরা প্রত্যাহার করে নেন।
এমন অভিযানের কারণ কী? চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস পাওয়ার পরেও বেশ কয়েক দিন কেটে গিয়েছে। সরকারের তরফে এখনও কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের নিয়োগের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। বাড়ানো হয়েছে ১৬০০ সিট। গত দু-সপ্তাহে কমিশনে গিয়েছেন তাঁরা। কমিশনের তরফে কোন সদুত্তর মেলেনি। তাই ঝড়জলের রাতে এমন অভিযানের উদ্যোগ। যদিও কলকাতা পুলিশের ডিসি সাউথের আশ্বাসে সেই অভিযান তাঁরা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন নিয়োগের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। ওয়েটিং প্রার্থীদের জন্য ৫ হাজার ২৬১ টি নতুন পদ তৈরি করা হয়েছে। শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা প্রার্থীদের জন্য ১৬০০ নতুন পদ তৈরি করা হয়েছে। মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতেই তাঁদের নিয়োগের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দু-সপ্তাহ কেটে গেলেও কোন সুরাহা হয়নি। বরং যত দিন যাচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। নাম জড়িয়েছে কমিশনের একাধিক কর্তাদের। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। নিয়োগের বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছা দেখা না গেলে ফের যে চাকরিপ্রার্থীরা বড়সড় আন্দোলনে নামবেন, বলাই বাহুল্য।