১৩ বছর আগে ‘টাটা’ জানালেও বাংলায় আবার টাটাকেই চাইছেন পার্থ
“আমাদের লড়াই ছিল বাম সরকার ও তাদের জমি অধিগ্রহন নীতির বিরুদ্ধে। টাটার বিরুদ্ধে নয়” - মত পার্থর
২০০৮-এ সিঙ্গুরে টাটার বিদায়, ২০১১-এ পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির পটচিত্রে আমুল পরিবর্তন থেকে ২০২১-এ ‘আসল পরিবর্তন’-এর ডাক! ২০১১-র লড়াইতে টাটাই ছিল মমতা ব্যানার্জির অন্যতম ট্রাম্প কার্ড। এই ১৩ বছরে গঙ্গায় অনেক জল গড়িয়েছে। সিঙ্গুরে টাটার কারখানা আর হয়নি। সেই জমিও হারিয়েছে তার উর্বরতা। আর আজ মুখ্যমন্ত্রীর মন্ত্রীসভার অন্যতম মুখ, নেত্রীর লড়াইয়ের অন্যতম সহযোদ্ধা, বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে টাটা’র গুণগান। ঘটনাটি যদিও খুব কাকতালীয় নয়। তৃতীয়বারের জন্য বিধানসভা দখল করার পর থেকেই পার্থবাবু বারবার সৌহার্দপূর্ণ বার্তা দিয়ে চলেছেন ‘রাজ্যত্যাগী’ টাটাদের।
আজ পার্থ বলেন, “টাটারা আমাদের শত্রু নন। অনিচ্ছুক কৃষকদের বহুফসলি জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমরা জমির স্থান বাছাই করতে বলেছিলাম। টাটারা আসলে খুশি হব। অনেক শিল্প এখানে বিনিয়োগ করেছে। তাদের আরও উৎসাহিত করতে হবে”। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই তিনি মন্তব্য করেছিলেন, “আমাদের লড়াই ছিল বাম সরকার ও তাদের জমি অধিগ্রহন নীতির বিরুদ্ধে। টাটার বিরুদ্ধে নয়”। পার্থবাবু আজ আরও বলেন, “আমাদের মুল লক্ষ্য বাংলায় কর্মসংস্থান। টাটাদের কোনও দাবি থাকলে আমরা তাকে স্বাগত জানাব। রিলায়েন্সের মতো বড় সংস্থাও এখানে কাজ করছে। বাংলায় শিল্পায়ন হোক, আমরা সকলেই চাই। কিন্তু শিল্প কৃষির সমন্বয়ে অগ্রগতি চাই”।
প্রসঙ্গত, ১৩ বছর আগে বাংলায় পাততাড়ি গুটিয়ে টাটা চলে গেছিল গুজরাতে। সেখানে রমরমিয়ে ব্যবসাও করেছে রতন টাটার ‘স্বপ্নের প্রোজেক্ট’। কিন্তু তখন থেকেই সিঙ্গুরের সেই বহুফসলি জমিতে রয়ে গেছে শ্মশানের নিস্তব্ধতা। যদিও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শাসনকালে বারবার শিল্প সম্বেলনের আয়োজন করেছেন রাজ্যে। এমনকি শিল্পের আশায় বিদেশেও পাড়ি দিয়েছেন তিনি। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বেশ কিছু নতুন শিল্পের মুখ দেখেছে বাংলা। এমতবস্থায়, পার্থবাবুর এই মন্তব্য যে যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ তা বলাই বাহুল্য।