কলকাতার ওমিক্রণ ভেরিয়েন্টের সিংহভাগই BA.2, আশঙ্কায় স্বাস্থ্য দপ্তর
এই ধরনের ভেরিয়েন্ট এর জন্য জিনোম সিকোয়েন্সিং অত্যন্ত প্রয়োজনীয়
কলকাতার করোনা আক্রান্তদের দেহে এবার মিলতে শুরু করলো একটি নতুন ধরনের করোনা মিউটেশন। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের ভাষায় এই নতুন ধরনের মিউটেশনের নাম BA.2 এবং প্রকারান্তরে এটি ওমিক্রণের একটি বিশেষ রূপ। চিরাচরিত করোনাভাইরাস টেস্ট আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় এই বিশেষ ভেরিয়েন্ট ধরা পড়ে না। এই কারণে এই ভেরিয়েন্ট এর শনাক্তকরণের জন্য সবথেকে আগে প্রয়োজন হয় জিনোম সিকোয়েন্সিং। শহরের বিভিন্ন নামিদামি ল্যাবরেটরীতে বিগত দিনে জিনোম সিকোয়েন্সিং এর জন্য যতজনের নমুনা পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যে ৮০ শতাংশের দেহে এই বিশেষ ধরনের ভেরিয়েন্ট এর খোঁজ মিলেছে, যা স্বাস্থ্য ভবনের মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
তবে সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো, যাদের দেহে এই BA.2 ওমিক্রণ এর সন্ধান মিলেছে তাদের বিদেশে যাতায়াতের কোনো ইতিহাস নেই। যাদের বিদেশে যাতায়াতের ইতিহাস রয়েছে তাদের মধ্যে সবথেকে বেশি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে BA.1 ভেরিয়েন্ট। একজন উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানালেন, প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকায় যে B.1.1.529 ওমিক্রণ করোনা ভাইরাসের সন্ধান মিলেছিল, পরবর্তীতে সেই ভেরিয়েন্ট এর তিনটি আলাদা মিউটেশন তৈরি হয়েছে। এই তিনটির নাম যথাক্রমে BA.1, BA.2 এবং BA.3। ভারতের যদিও তৃতীয় মিউটেশনের কোন ঘটনা এখনও পর্যন্ত সামনে আসেনি। অন্যদিকে, কলকাতায় BA.2 কার্যকরী থাকলে মহারাষ্ট্র কিন্তু জর্জরিত হয়েছে BA.1 মিউটেশনের দৌরাত্ম্যে। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এর জায়গা নিতে শুরু করেছে এই BA.1 মিউটেশন।
জানিয়ে রাখি, যেহেতু BA.1 মিউটেশনে এক ধরনের বিশেষ S-GENE ড্রপ আউট মিউটেশন লক্ষিত হয়, তাই চিরাচরিত RT-PCR পরীক্ষার মাধ্যমে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ভেরিয়েন্ট চিহ্নিত হতে পারে। তবে সমস্যাটা হয়ে যায় BA.2 মিউটেশনের জন্য। এক্ষেত্রে কোনো রকম S-GENE মিউটেশন থাকে না বলে RT-PCR পরীক্ষায় এই ধরনের করোনাভাইরাস ধরা পড়ে না। তাই, BA.2 কে চিহ্নিত করার জন্য জিনোম সিকোয়েন্সিং অত্যন্ত প্রয়োজন। আপাতত কলকাতার বেশ কিছু জায়গা থেকে ১৫০ এর কাছাকাছি মানুষের করোনা পজিটিভ নমুনা গ্রহণ করা হয়েছে জিনোম সিকোয়েন্সিং পরীক্ষার জন্য। তারমধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষের দেহে ওমিক্রণ ভেরিয়েন্ট এর নিদর্শন মিলেছে। এদের সবার দেহে CT ভ্যালু ৩০ এর নিচে, যা দর্শায়, এদের সবার দেহেই ভাইরাল লোড অত্যন্ত বেশি, যা কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের জন্য খুব একটা ভালো বিষয় না।