"কলকাতার জন্মদিন নেই"— এই সত্য জানে কয়জনে! কলকাতার নামী রেস্তোরার বিজ্ঞাপন ঘিরে প্রশ্ন..
বাঙালী হুল্লোড় প্রিয়। হুল্লোড় আর আমোদে বাঁচতে ভালোবাসে সে। কিন্তু তা বলে সত্যকে দূরে রেখে, শুধু হুজুগে মেতে থাকা আর কতদিন!
২৪ শে অগাষ্ট নাকি কলকাতার জন্মদিন। হুজুগে মেতেছেন অনেকেই। রেস্টুরেন্টে বিশেষ ছাড় থেকে শুরু করে সিনেমা হলের পর্দা — সর্বত্রই জব চার্ণককে কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা ধরে নিয়ে ওইদিন বিশেষ উৎসবে মাতার অঙ্গীকার করেছেন। কিন্তু আদৌ যে কলকাতার জন্মদিন বলে কিছু নেই, তা জানেন কতজন!
এই বিষয়ে প্রথম তিলোত্তমাকে নাড়িয়ে দেয় সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার পরিষদ। তাদের লড়াইকে স্বীকৃতি জানিয়ে ২০০৩ সালের ১৬ই মে কলকাতা হাইকোর্ট ঐতিহাসিক রায় দেয় যে, "কলকাতার জন্মদিন নেই এবং কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা কেউ নন।"
(The Court: By an order dated 5th April, 2002, a committee of the following persons was constituted to go into the question whether Job Charnayak was a founder of Calcutta or not, what is the date of birth of Calcutta and who was the founder:-- 1. Prof. Nemai Sadhan Bose, 2. Prof. Barun De, 3. Prof. Pradip Sinha, 4. Prof. Arun Kumar Dasgupta, 5. Prof. Sushil Chowdhury. Reference: Kolkata High court verdict)
আজ ১৯ বছর পরেও প্রিয় শহরের জন্মদিন পালন করার হুজুগে মাতছে সমাজ সম্পূর্ণভাবে সত্যটাকে অস্বীকার করে। আমরা একদিকে ভারতবর্ষের ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবস পালন করছি, আর অন্যদিকে কি আদৌ "কলোনিয়াল হ্যাঙ্গভার" কাটিয়ে উঠতে পারছি?
কলকাতার একটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টের বিজ্ঞাপনে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে জ্বলজ্বল করছে "কলকাতার ৩৩৬তম জন্মদিন" পালনের কথা। সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জানান, তাঁরা এই তথ্য পেয়েছেন গুগল থেকে। প্রশ্ন ওঠে, আজ থেকে ১৯ বছর আগে আমাদের প্রাণের প্রিয় শহর কলকাতাকে নিয়ে মাননীয় কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তার ঊর্ধ্বে গিয়ে গুগল এখনও কীভাবে পুরোনো তথ্যকে রেখে দিয়েছে (পরিদর্শক এই সত্যতা যাচাই করেনি) এবং কলকাতার একটি নামী রেস্তোরাই বা কীভাবে আসল সত্যকে না জেনে এই হুজুগে মেতেছেন? আমাদের জীবন তথা সমাজ কি তাহলে শুধু ইন্টারনেট নির্ভর?সত্য ইতিহাসকে জানার আগ্রহ কি বিন্দুমাত্রও নেই বর্তমান জেন ওয়াইয়ের? প্রশ্ন অনেক, উত্তরদাতা খুঁজতে উদ্যোগী পরিদর্শক।