খয়েরী শাড়ি, ছোট্ট টিপ, ছিমছাম সাজে অতিথি সেবা, তিনিই যেন সাক্ষাৎ অন্নপূর্ণা!
মল্লিক বাড়ির অন্নপূর্ণা পুজোর মুহুর্ত যাপনকে, অনুগামীদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন কোয়েল
বাড়িতে কোনো দেবীকে পুজো করা হলে, তাঁকে আমরা করে তুলি 'ঘরের মেয়ে'। আবার ঘরের মেয়ে যখন নিষ্ঠাভরে পুজোর কাজ সামলানো থেকে, অতিথিদের আপ্যায়নে রত হন, তখন তিনিও যেন কোন দেবীর তুলনায় কম যাননা। যেমনটা হয়েছে, কলকাতার বিখ্যাত মল্লিক বাড়ির অন্নপূর্ণা পুজোকে কেন্দ্র করে, মল্লিক বাড়ির মেয়ে, অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের (Koel Mallick) ক্ষেত্রে।
কোয়েল, বাংলা ইন্ড্রাস্ট্রির যেকোনো আকাঙ্খিত নায়িকাদের মধ্যে একজন। তাঁর অভিনয় দক্ষতা তাঁকে 'টলি কুইন' এর সিংহাসনে বসিয়েছে। সেই কোয়েল রুপোলি পর্দার জগতে থেকেও, বাড়ির ঐতিহ্য বা সংস্কৃতিকে পালন করতে, একটুও কার্পণ্য করেননা। একেবারে উজাড় করে দেন নিজের সবটুকু। আর এখানেই তিনি এখন সঠিক মানুষ হয়ে ওঠেন। মল্লিক বাড়ির দুর্গা পূজার কথা সকলে জানলেও, অন্নপূর্ণা পুজো নিয়ে সেভাবে অনেকেই অবগত ছিলেননা। গত ৯ এপ্রিল ছিল অন্নপূর্ণা পুজো। বাড়ির পুজোয়, খয়েরী শাড়ি, ম্যাচিং ব্লাউজ, ছোট্ট টিপ এবং মিষ্টি হাসিতে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং বাড়ির মেয়ে, কোয়েল মল্লিক। কখনো মায়ের মূর্তির সামনে একা, কখনো বা মা বাবাকে সঙ্গী করে, সামাজিক মাধ্যমে (Social Media) মুহূর্তগুলি প্রকাশ করেন। তখনই অনেকে জানতে পারেন, যেই মল্লিক বাড়ি কলকাতার বুকে, দুর্গা পূজার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র, সেই মল্লিক বাড়ি মা অন্নপূর্ণারও আশীর্বাদপ্রাপ্ত। সম্প্রতি কোয়েল একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেখানে তাঁকে বাড়ির পুজোয় বিভিন্ন ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। কখনো মায়ের সামনে কাপড় ধরতে, কখনো শঙ্খধ্বনি দিতে, কখনো বা তাঁকে দেখা গেছে, অতিথিদের উদ্দ্যেশ্যে আরতির পর, 'ওম' দিতে। এছাড়াও স্বয়ং রঞ্জিত মল্লিককেও দেখা গেছে, বাড়ির পুজোয় কাঁসর হাতে পুজোর নিয়মে সামিল হতে।
গত ২০২০ তে কোয়েলের জীবনে একটি নতুন অধ্যায়ের শুভারম্ভ হয়েছে। তিনি মা হয়েছেন। অন্যান্য মায়েদের মত তাঁরও বাসনা, তাঁর ' সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে'। ছোট্ট ছেলে কবিরকে (Kabir) নিয়ে তাই তিনি উপস্থিত ছিলেন মল্লিক বাড়ির অন্তঃপুরে। তাঁর সন্তানকে তিনি করে তুলতে চান, তাঁদের বাড়ির মতই সংস্কৃতিমনস্ক। তিনি চান, তাঁর ছেলে ছোট থেকেই চিনুক তাঁদের পুরাতন ঐতিহ্যকে। মা হয়ে কোয়েলের এই মনস্তত্ত্ব, সত্যিই কুর্ণিশের যোগ্য।
কোয়েলের হাতেখড়ি হয় ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে, ২০০৩ সালের ছবি, 'নাটের গুরু' (Nater Guru) দিয়ে। তারপর একের পর এক তাঁর মুকুটে পালক যোগ হতে থাকে। তাঁর মা হওয়ার আগের, শেষ ছবি ছিল, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (Shirshendu Mukhopadhyay) রচিত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের (Parambrata Chatterjee) পরিচালনায়, সায়েন্স ফিকশন 'বনি' (Bony) । মা হওয়ার পর তাঁকে বড় পর্দায় দেখা যায়নি সেইভাবে। যদিও তাঁর অনুগামীরা স্বাভাবিক ভাবে, তাঁকে পাওয়ার জন্য দিন গুনে চলেছেন।