জৈন হাওয়ালা কাণ্ড নিয়ে অসত্য তথ্য পেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, অভিযোগ জগদীপ ধনকরের
মুখ্যমন্ত্রীকে ছোট বোন বলে উল্লেখ করে তাকে নিয়ে বড় ঘোষণা ধনকড়ের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর, এই দুজনের মধ্যে রাজনৈতিক সমস্যা প্রথম থেকেই চলে আসছে। রাজ্যপাল হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী বারংবার থেকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির এজেন্ট বলে। সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির হেরে যাওয়ার পর থেকেই আরো প্রবলভাবে এই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কিছুদিন আগেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি প্রত্যক্ষভাবে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়েছিলেন। তারপর থেকেই শাসকদল বারংবার রাজ্যপাল কে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে। একেবারে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে থাকার অভিযোগ আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করলেন জৈন হাওয়ালা কাণ্ডে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর অভিযুক্ত রয়েছেন। তবে এর পাল্টা রাজ্যপাল নিজে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজের দিকটা স্পষ্ট করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন চার্জশিটে তার নাম ছিল না। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত অভিযোগকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।
রাজ্যপালের বক্তব্য, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত বর্ষিয়ান একজন রাজনীতিবিদের কাছ থেকে এই রকম মন্তব্য আশা করিনি। উনি সকলের মধ্যে মিথ্যে অভিযোগ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন এবং অসত্য তথ্য পরিবেশন করে চলেছেন। আমার নাম জৈন হাওয়ালা কাণ্ডের চার্জশিটে ছিল না। আমার বিরুদ্ধে ওনার কাছে কোন তথ্য প্রমাণ নেই। চার্জশিটে যাদের নাম ছিল তার বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন। এরমধ্যে যশবন্ত সিনহা এবং অজিত পাঁজা দের নাম ছিল। পরবর্তীতে তারা অভিযোগ মুক্ত হয়েছিলেন। যশবন্ত সিনহার কাছ থেকে উনি সঠিক তথ্য নিন।"
তার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে তিনি ছোট বোন বলে উল্লেখ করলেন। তিনি তার উদ্দেশ্যে বললেন, "ভারতীয় সংস্কৃতিতে বোনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যায় না। তাই আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসত্য তথ্য দিলেও তার বিরুদ্ধে কোন রকম পদক্ষেপ করছি না।" তার পাশাপাশি ধনকর এর অভিযোগ, "উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পর বাজেট অধিবেশনে ভাষণের খসড়া পাই। সেখানে অনেক অবান্তর কথা বলা রয়েছে, সেই দেখে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করি। তারপর উনি আমাকে ফোন করেন এবং বলেন মন্ত্রিসভা এই খসড়া পাস করেছে এবং তার কিছু করার নেই। আর কিছুক্ষণের মধ্যে সাংবাদিক বৈঠক করে আমার বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য পরিবেশন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"
শুধু তাই নয় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও তিনি তোপ দাগলেন। জিটিএ অব্যবস্থা, উত্তরবঙ্গ সমস্ত কিছু নিয়ে রাজ্য সরকার কে কটাক্ষ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এছাড়া সংবাদমাধ্যমকে নিজেদের ভূমিকা পালনের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তিনি তাদের কাছে আর্জি রেখেছেন, "সত্যিটা কি আপনারা খুঁজে বের করুন। দয়া করে চুপ থাকবেন না। গণতন্ত্রে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।"