বাঘে-মানুষে টানাটানি, জিত মানুষেরই
সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের সঙ্গে লড়াই, অবশেষে...
রুজিরুটির টানে বেরিয়ে ছিলেন একদল মৎস্যজীবী। উদ্দেশ্য দুর্ভেদ্য সুন্দরবনে (Sundarban) মাছ, মধু ও কাঁকড়া শিকার। এই প্রথম নয়, আগেও জীবন বাজি রেখে বারবার জীবিকার টানে ছুটে যেতে হয় এমনই করেই। ঠিক একই উদ্দেশ্য নিয়ে শনিবার সুন্দরবনে পাড়ি দিয়েছিলেন একদল মৎস্যজীবী। কিন্তু এইভাবে যে বাঘের মুখে পড়তে হবে এবং হাড়হিম করা ঘটনার সাক্ষী হতে হবে, তা কেই-বা জানত!
শনিবার সুন্দরবন উপকূল থানার সাতজেলিয়া অঞ্চলের জনা পাঁচেক মৎস্যজীবী সুন্দরবনে পাড়ি দিয়েছিলেন মাছ, কাঁকড়া, মধু সংগ্রহের নেশায়। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন গৌর মিস্ত্রি নামক এক ব্যক্তিও। স্থানীয় সূত্রে খবর, নৌকায় এই মৎস্যজীবীদের দল ঝিলার জঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। শনিবার সকালে মরিচঝাঁপি লাগোয়া জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরেছিলেন। বেশ জমিয়ে মাছ পড়ছিল বলে খবর। পাঁচ জনের দল একসঙ্গে মাছ ধরতে ধরতে আচমকাই সঙ্গী গৌর মিস্ত্রি অল্প একটু দূরে চলে যান। কথায় আছে, 'ঝোপ বুঝে কোপ', তেমনই সঙ্গীদের আলাদা হতেই পেছন থেকেই ঘাড়ের উপর আক্রমণ করে দক্ষিণরায়। শুরু হয় সেয়ানে সেয়ানে টক্কর। তৎক্ষণাৎ গৌরের বাকি সঙ্গীরা বুঝতে পেরেই ছুটে আসেন। নৌকার বৈঠা, বাঁশ, লাঠি দিয়ে আক্রমণ করেও কাবু করা যায়নি বাছাধনকে। শেষমেশ নৌকায় থাকা মাছ ধরার জাল ছুঁড়ে মারা হয় বাঘের উপর। জালের ফাঁসে আটকে ভয় পান দক্ষিণরায়। ছুটে পালায় গভীর জঙ্গলে।
এই রোমহর্ষক ঘটনার পর গুরুতর জখম গৌর মিস্ত্রিকে তৎক্ষণাৎ ডাঙায় ফিরিয়ে আনেন তাঁর বাকি সঙ্গীরা। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখম গৌর মিস্ত্রি। বাঘে-মানুষে টানাটানিতে মানুষের জিতে ফিরে আসার কত কাহিনী শোনা যায়। এই বাস্তব ঘটনার কাছে সমস্ত কাহিনী ফেল। জীবিকার প্রয়োজনে জীবন বাজি রেখে মানুষের এই সংগ্রাম আর কতদিন বলছেন একাংশ।