এবারে দাদার অনুগামীরাও ফিরতে চাইছেন তৃণমূলে, পদ্ম শিবিরে বড় ভাঙ্গন
অমিত শাহের সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগদান করা বেশ কিছু নেতা ফুল পাল্টে তৃণমূলে আসার পরিকল্পনা নিচ্ছেন
শুভেন্দু অধিকারী যখন বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন তখন অনেক তৃণমূল নেতা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ নিজেই। মেদিনীপুরের শাহী সভা থেকে অনেকেই গেরুয়া পতাকা ধরে নিয়েছিলেন নিজের হাতে। কিন্তু, সূত্রের খবর অনুযায়ী তাদের মধ্যে অনেকে আবার তৃণমূলের ফেরার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছেন। স্থানীয় মহলে তথাকথিত ' দাদার অনুগামী ' মানুষেরাও আজকে দিদির দিকেই, কিন্তু কেন? শুধুমাত্র কি পুরনো দলের প্রতি আনুগত্য নাকি মুকুল ফ্যাক্টর? মুকুল রায় বিজেপি তৃণমূলে চলে আসার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন এবারে মুকুলের অনুগামীরা তৃণমূলে ফিরবেন। এককালে মুকুল রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। তার ফেরার আশায় কে পারেন একেবারে নেগেটিভে থাকলেও তার তথাকথিত অনুগামীরা এবারে ফুল পরিবর্তন করতে চলেছেন বলেই খবর।
এই তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন দুলাল মন্ডল এবং কাবেরী চট্টোপাধ্যায়। দুলাল মন্ডল তৃণমূলের কিষান এবং ক্ষেতমজুর সংগঠনের জেলা সভাপতি ছিলেন। অন্যদিকে কাবেরী চট্টোপাধ্যায় ছিলেন জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ।দুজনেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, এবারে দুজনেই তৃণমূলে যোগ দিতে চাইছেন। এ প্রসঙ্গে দুলাল মণ্ডল বলেছেন, " আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু ওইটুকুই , আমি একদিনো বিজেপি করিনি। " অন্যদিকে কাবেরি চট্টোপাধ্যায় বলছেন, " আমি তো তৃণমূল টাই করি। উত্তরার অর্থাৎ গরবেতার বিধায়ক উত্তরা সিংহের প্রচারে গিয়েছিলাম। মুকুল দা কে আমি ফোন করেছিলাম কথা হয়েছে। মেদিনীপুরে গেলে আমি তো জেলা পরিষদে যাই। দলের সবার সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে।"
তবে এই সমস্ত নেতাদের তৃণমূল আবার কবে ফিরিয়ে নেবে? এই প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, "কাউকে দলে ফেরাতে গেলে রাজ্য নেতৃত্তের অনুমতি প্রয়োজন। রাজ্য নেতৃত্ব অনুমতি দিলে তবে এরা তৃণমূলে আসতে পারবেন আবার।" সঙ্গে তিনি বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, "বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে।" যদিও এই বিষয়টিকে একেবারেই কোন বড় বিষয় হিসেবে গ্রহণ করতে চাইছে না ভারতীয় জনতা পার্টি। তাদের কথায় যারা বিজেপিতে কিছু পাওয়ার আশায় এসেছিলেন, তাঁরা স্বচ্ছন্দে চলে যেতে পারেন কারন দলে থেকে অন্তর্ঘাত বরখাস্ত করা হবে না। তবে শুধুমাত্র এই কয়েকজন নন, পশ্চিম মেদিনীপুরের আরো অনেক বিজেপি নেতার তৃণমূলে যোগদান করার সম্ভাবনা আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন প্রণব বসু, অমূল্য মাইতি, তপন দত্ত, আকাশদীপ সিংহ, স্নেহাশীষ ভৌমিক এবং রমাপ্রসাদ গিরি। এরা সকলেই পশ্চিম মেদিনীপুরের নিজের এলাকার হেভিওয়েট নেতা। তাই যদি এরা আবার ফুল পাল্টে তৃণমূলে চলে আসেন, তাহলে পশ্চিম মেদিনীপুর বিজেপিতে বড়-ছোট ভাঙ্গন ধরবে, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।