মানবাধিকার কমিশনের দুষ্কৃতী তালিকায় বেশ কিছু তৃণমূল নেতার নাম, বিক্ষুব্ধ মমতা

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 16/07/2021   শেষ আপডেট: 16/07/2021 7:07 a.m.
twitter.com/BanglarGorboMB

অন্যদিকে এই রিপোর্ট নিয়ে একেবারে অলআউট আক্রমণে নেমেছে ভারতীয় জনতা পার্টি

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট একেবারে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা মন্ত্রী। এই তালিকায় নাম রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শেখ সুফিয়ান, পার্থ ভৌমিক, উদয়ন গুহ, জীবন সাহা, খোকন দাস এবং শওকত মোল্লা এর মত বেশ কিছু নেতার। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই রিপোর্ট রীতিমতো বিতর্ক সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক মহলে।

এই প্রসঙ্গে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, " পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এতজন নেতা-মন্ত্রীদের সম্পর্কে একটি নিরপেক্ষ সংস্থা এই ধরনের এত কিছু মন্তব্য করছে। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। একজন রাজনৈতিক কর্মী এবং একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের মন্তব্য স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে দেয় পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর। আইনের শাসনের পরিবর্তে শাসকের আইন চলছে পশ্চিমবঙ্গে।

বিবৃতি জারি করে এদিন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফ থেকে রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট দায়ের করা হয়েছে। যদিও এই রিপোর্ট কোন সংবাদমাধ্যমের কাছে পৌঁছানো হয়নি। কেবলমাত্র আইনজীবীদের কাছে এই রিপোর্ট রয়েছে। এই মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন এই কারণে এই রিপোর্টের গোপনীয়তা নিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে মানবাধিকার কমিশন। রিপোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও গোটা মামলার বিচার পর্ব রাজ্যের বাইরে করার আর্জিজানিয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। তার পাশাপাশি আদালতের পর্যবেক্ষণে সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও দ্রুত বিচার করতে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করে সমস্ত বিচারপর্ব শেষ করার কথা জানিয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।

যদিও এই রিপোর্ট নিয়ে চরম বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস। রিপোর্টে নাম থাকা তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, "আমার অত্যন্ত লজ্জা লেগেছে। আমি নিজে একজন আইনজীবী। আমি গত ১০ বছর রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছি। না জেনে ভুল তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের তরফ থেকে। আমার নামে পশ্চিমবঙ্গের কোন থানায় কোন এফআইআর দায়ের করা নেই। একটা জেনারেল ডায়েরি যদি আপনারা খুঁজে আনতে পারেন তাহলে তাকে পুরস্কৃত করবো আমি।আমার দল যা সেই অনুযায়ী আমি পদক্ষেপ গ্রহণ করব। প্রয়োজনে মানহানির মামলা করা হবে।" অন্যদিকে, এই রিপোর্ট এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেছেন, "দুষ্কৃতীরা কিভাবে বিধায়ক কিংবা মন্ত্রী হয়ে যাচ্ছে সেটা আস্তে আস্তে পশ্চিমবঙ্গ দেখাতে শুরু করেছে। আগেই সমস্ত বিহারে দেখা যেত। কিন্তু এখন সরাসরি পশ্চিমবঙ্গে এই প্রবণতা শুরু হয়েছে। এই সমস্ত বন্ধ না হলে আগামী দিনে চিন্তা বাড়বে পশ্চিমবঙ্গের।"

রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে যে চূড়ান্ত রিপোর্ট জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফ থেকে দায়ের করা হয়েছিল সেখানে রবীন্দ্রনাথের লাইন উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে কবিগুরুর মাটিতে এই হিংসা অনভিপ্রেত। এই হিংসা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক। তার পাশাপাশি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। যদিও এই রিপোর্টের বিরোধিতা করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, বাংলাতে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এই কারণেই এই রকম একটি বিতর্কিত রিপোর্ট দায়ের করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।