আনারুল হোসেনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, নিজেকে 'নির্দোষ' দাবি করলেন তিনি
রামপুরহাটের ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আনারুল হোসেন
খুন এবং অগ্নিকান্ড ঘটে গিয়েছে অনুব্রতর এলাকায়। বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই কান্ড নিয়ে উত্তাল গোটা জেলা। রামপুরহাট-১ নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান তথা তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় খুন হন। আর এরপরেই এলাকার দশটি বাড়িতে আগুন লাগে। দুটি ঘটনার মধ্যে সংযোগ খুঁজতে ব্যস্ত গোটা পুলিশ প্রশাসন।
কিন্তু কি হয়েছিল? স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার ভাদু শেখ তার বন্ধুদের সাথে ১৪ নং জাতীয় সড়কের ধারের একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। চা খাবার পরপরই তাকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা বোমা ছোঁড়ে। তৎক্ষণাৎ তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। এদিকে ঐটুকু সময়ের মধ্যে ঐ এলাকার দশটি বাড়িতে আগুন জ্বলে। বাড়ির ভেতরে যারা ছিলেন তারা জীবন্ত জ্বলতে শুরু করে। বাদ যায়নি শিশু মহিলারাও। সূত্রের খবর, আটজন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। পাঁচজন বীরভূম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে। শাসকদল বলছে, ভাদু শেখকে খুন করেছে বিরোধী দল। অন্যদিকে বিরোধীদলের অভিযোগ, শাসকদলের কর্মীর মৃত্যুতে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বাড়িঘর আগুন লাগিয়েছে শাসক দল। আপাতত রাজ্যজুড়ে বিশৃঙ্খলতার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে বঙ্গরাজনীতি উত্তাল হয়ে পড়েছে। গতকালই বিধানসভায় শুভেন্দুর নেতৃত্বে বগটুইয়ে পুড়ে যাওয়া লাশের ছবি নিয়ে 'পুলিশ মন্ত্রী হায় হায়' শ্লোগান তুলেছিলেন বিজেপি বিধায়করা, এরপর তাঁরা ওয়াকআউট করেন। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী বগটুই এলাকা পরিদর্শন করতে রওনা দিয়েছেন। বেলা বারোটায় তাঁর পৌঁছানোর কথা। অন্যদিকে তৃণমূলকে টেক্কা দিয়ে মমতার আগে বগটুইয়ে পৌঁছানোর ইচ্ছে জেপি নাড্ডা মনোনিত বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের। সেখানে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রিপোর্ট তৈরি করে আজই দিল্লি ফিরে যেতে পারেন তাঁরা। সেখানে গিয়ে তাঁরা রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জমা দেবে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে বগটুইতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা। আজই আবার সেখানে যাওয়ার কথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রামপুরহাটের ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আনারুল হোসেনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। থানায় আত্মসমর্পণ না করলে গ্রেফতার করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, "তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। নারকীয় ঘটনার সময় রাতে তিনি হাসপাতালে ছিলেন বলেও জানিয়েছেন"।