২০৫০-এর মধ্যে বসবাসের অযোগ্য হবে কলকাতা, কি বলছে বিশ্ব উষ্ণায়নের এই রিপোর্টে

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 08/03/2022   শেষ আপডেট: 08/03/2022 11:17 a.m.
https://twitter.com/SPACEdotcom

আইপিসিসি'র রিপোর্ট আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে উত্তরবঙ্গের জন্যেও

বিগত কয়েক দশক ধরেই বিশ্ব উষ্ণায়ন (global warming) নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পরিবেশবিজ্ঞানী মহলে। মেরু অঞ্চলে বরফ গলার জন্য বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর। যার জেরে আশঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে বিশ্বের অসংখ্য উপকূলবর্তী অঞ্চল-সহ একাধিক উপকূলীয় বড় শহরগুলিতে। সেরকমই সম্প্রতি ইন্টারগভর্ণমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (IPCC) প্রকাশিত রিপোর্টে ধরা পড়েছে অদূর ভবিষ্যতে দেশ-দুনিয়ার পরিস্থিতি। রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে বাংলা, বিশেষত উপকূলবর্তী পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এবং কলকাতাকে নিয়ে।

আইপিসিসি'র ওয়ার্কিং গ্রুপের ষষ্ঠ পর্যালোচনা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, জলস্তর বৃদ্ধির জন্য যে সমস্ত রাষ্ট্রগুলির কপালে বিপদ ঘনাচ্ছে, তারমধ্যে ভারত অন্যতম। কেবলমাত্র একবিংশ শতাব্দীতেই ভারতের প্রায় সাড়ে তিন কোটি উপকূলবর্তী বাসিন্দারা বন্যার শিকার হতে পারেন নিয়মিত। যে সংখ্যাটা শতাব্দীর শেষে গিয়ে দাঁড়াতে পারে সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটিতে। ২০৫০ সালের মধ্যে পাল্টে যেতে পারে উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র। ২১০০ সালের ভিতর ব্যাপক রদবদল আসতে পারে উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজনের জীবন-জীবিকায়। ডুবে যেতে পারে বাংলা, উড়িষ্যা, অন্ধ্রর উপকূলীয় অঞ্চলগুলি।

রিপোর্টে এই আশঙ্কা করা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের আঁচ লাগতে পারে কলকাতা, টোকিও, ম্যানিলা, জাকার্তার মত একাধিক মেট্রো শহরে। শহরগুলিতে বাড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প, ভূমিধস, অগ্নুৎপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

কলকাতার জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা শুনিয়েছে আইপিসিসির এই রিপোর্ট। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, প্রতিবছর প্রায় দেড় ডিগ্রি করে বাড়তে পারে কলকাতার তাপমাত্রা। যার জেরে প্রাকৃতিক পরিবেশে আসতে পারে পরিবর্তন। সমুদ্রের তলদেশ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য ২০৫০ সালের মধ্যে বসবাসের অযোগ্য শহর হয়ে উঠতে পারে কলকাতা। জলস্তর বাড়ায় ঢুকতে পারে সুন্দরবন অঞ্চলের বহু ছোট দ্বীপ। এছাড়াও আশঙ্কার কথা শুনিয়ে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভূগর্ভস্থ জল শেষ হয়ে যেতে পারে কলকাতা, দিল্লী কিংবা করাচির মত বড় শহরগুলিতে। যার ফলে সমস্যায় পড়বেন অগুনতি মানুষ।

রিপোর্টে উত্তরবঙ্গকে নিয়েও আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে আইপিসিসি'র রিপোর্ট। জানানো হয়েছে, অপরিকল্পিতভাবে গাছ কাটা, অনিয়ন্ত্রিতভাবে দূষণের বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ধসের আশঙ্কা বাড়ছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। তাই এখন থেকেই পরিকল্পনা করে বিপদের মোকাবিলা করার নিদান দিয়েছে আইপিসিসি'র রিপোর্ট। বলা হয়েছে, আগামী দশ, পনেরো বছর সময়কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় সবুজায়ন বৃদ্ধি এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে পরিবেশের। তবেই ঠেকানো সম্ভব আসন্ন বিপর্যয়ক।