এত ভাল রেজাল্ট করেও হল না মিষ্টিমুখ, অভাবকে সঙ্গী করেই জয় হল সোমনাথের
হাস-মুরগি প্রতিপালন থেকে বিড়ি বাঁধার কাজ, প্রতিকূলতা পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ষষ্ঠ বাঁকুড়ার সোমনাথ
পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৪৪ দিনের মাথায় আজ ফলপ্রকাশ হয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের। প্রথম দশে রয়েছেন ২৭২ জন। মেধাতালিকায় বেশিরভাগ পড়ুয়াদের কারও বাবা চাষ করেন, কারও বাবা নেই। সব মিলিয়ে অভাবের সংসারেই বেড়ে ওঠা। তবুও আর্থিক প্রতিকূলতাকে তুচ্ছ প্রমাণ করে উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় স্থান পেলেন বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী।
তার মধ্যে চোখে জল এসেছে বাঁকুড়ার সোমনাথ পালের নম্বরে। বাঁকুড়া গোয়েঙ্কা হাইস্কুলের সোমনাথের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪। সোমনাথ এবার পঞ্চম হয়েছে। তাঁর পঞ্চম স্থান অধিকার করায় খুশি সকলেই, তবে এতটাই অভাব তার পরিবারে, যে মিষ্টি মুখ করারও জো নেই। বাবা শয্যাশায়ী, অসুস্থ বাবার চিকিৎসার খরচ জোগাতে হাঁস, মুরগি প্রতিপালন করতেন সোমনাথ। বিড়ি বাঁধার কাজেও মাকে সাহায্য করতেন তিনি।
সোমনাথ সংবাদমাধ্যমের সামনে বলে, "বাংলা, ইতিহাস একজন স্যরের কাছে পড়তাম। সংস্কৃত, ইংরেজি এগুলো এক জায়গায় পড়তাম। কোনও স্যারই টাকা নিতেন না। এতটা ভালো ফল আশা করিনি তবে ভাল ফল হবে ভেবেছিলাম। খুব ভাল লাগছে।" এরপর ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার নয়, ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় সোমনাথ।
অন্যদিকে আলিপুরদুয়ারের শালকুমারের বাসিন্দা বর্ষা পারভিন। দরমার ঘরে কোনওরকমে দিনযাপন করতেন শীল বাড়ি হাট উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও যে উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় জায়গা করে নেবে সে, তা ভাবতেও পারেননি বর্ষা। তেমনই মেধাতালিকা ছাড়াও, এমন বহু সোমনাথ ও বর্ষার মতোন ছেলেমেয়েরা আজ ভালো ফল করেছে নানান প্রতিকূলতার মধ্যে। তাঁদের প্রত্যেককে শুভেচ্ছা পরিদর্শকের তরফে।