উত্তরবঙ্গ বিজেপিতে ভাঙন! তৃণমূলে যোগ দিলেন বিজেপি নেতা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা
আলিপুরদুয়ার বিজেপি জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা ৮ জন বিজেপি নেতাসহ তৃণমূলে যোগদান করেছেন
একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election) বিজেপিকে বড় মার্জিনে হারিয়ে বাংলার মসনদে ফের বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) জয়ের পর থেকেই গেরুয়া শিবিরে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিছুদিন আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় (Mukul Roy) দলত্যাগ করলে সেই ভাঙনের পথে প্রশস্ত হয়। এবার মুকুল পথে হেঁটে বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) বিজেপি জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা (Gangaprasad Sharma)। আজ অর্থাৎ সোমবার মুকুল রায় এবং ব্রাত্য বসু তৃণমূল ভবনে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাকে দলীয় পতাকা হাতে তুলে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর সাথে আলিপুরদুয়ারের মোট ৮ জন বিজেপি (BJP) নেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। দলবদল করে বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানায় নিয়ে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেছেন, "জেলার নেতাদের কখনই গুরুত্ব দেয় না বিজেপি। আমরা নির্বাচনের আগে কাজ করলাম আর আমরাই কোন গুরুত্ব পেলাম না। নির্বাচনের আগেই দলবদল করতে পারতাম। কিন্তু তাতে আমাকে গদ্দার বলা হত। আমি দলকে ৫ টা আসন দিয়েছি। তারপর ফিরেছি। দলে গুরুত্ব না পাওয়ার জন্যই দল ছেড়ে দিলাম।"
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের বিজেপি সংগঠনের শিরদাঁড়া ছিলেন গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই আরএসএস এর সাথে যুক্ত ছিলেন। তারপর ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি জেলা সভাপতির দায়িত্ব পান। তার নেতৃত্বাধীন লোকসভা নির্বাচনে চমকপ্রদ ফল করেন। এমনকি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি অবস্থাতেও আলিপুরদুয়ারের ৫ টি আসনের কৃতিত্ব একমাত্র গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার। তাই এককথায় বলা যায় যে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করায় ভিত টলে যাবে গেরুয়ার শক্ত ঘাঁটি উত্তরবঙ্গ। এই প্রসঙ্গে মুকুল রায় বলেছেন, "এটা শেষের শুরু। বিজেপি যেখানে নিজেদের শক্তিশালী বলে দাবি করে সেই উত্তরবঙ্গ থেকে আগে ভাঙন ধরল দলে। এরপর আরও ভাঙ্গন দেখবেন।"
দলত্যাগের পর গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লার মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। আসলে জন বার্লা উত্তরবঙ্গ কে পৃথক রাজ্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পক্ষে গলায় সুর তুলেছেন। আর তাঁর এমন মন্তব্যের পর তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে। গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তাঁর মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, "তিনি কোনো কাজ করেননি। এখন রাজ্য ভাগ করতে এসেছে।" অন্যদিকে জন বার্লার মন্তব্যের পূর্ণ সমর্থন করেছেন বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসাবে বলবো, "মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে বহিরাগত শব্দটি এনেছেন তাতে এই দাবি উঠবেই। কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ২৩ জন মন্ত্রী রয়েছে। আমাদের এলাকার মানুষ বঞ্চিত। রাঢ়বঙ্গের যুবকদের চাকরি নেই। আমাদের এলাকার সম্পত্তি রাজ্যের কোষাগারে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা কিছু পাচ্ছি না। আগামী দিনে রাঢ়বঙ্গ থেকেও পৃথক রাজ্যের দাবি উঠতে পারে।"