"বিজেমূল নিয়ে আর স্লোগান নয়", 'কাকাবাবু' র জন্মদিনে নোট প্রকাশ সিপিএমের
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে তৃণমূল ও বিজেপি এক নয়
একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election) বাম শিবির জোট গঠন করে প্রচারে ঝড় তুললেও গোটা রাজ্যের মধ্যে একটিও আসন তাদের ভাগ্যে জোটেনি। দলের এমন বিপর্যয় স্বভাবতই কপালে ভাঁজ ফেলেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের শীর্ষ নেতাদের। দীর্ঘদিন পর্যালোচনার পর তারা মনে করছে যে নির্বাচনের আগে বামেদের বিজেমুল তত্ত্ব বা তৃণমূল ও বিজেপিকে (TMC & BJP) এক আসনে বসিয়ে আক্রমণ করার স্ট্র্যাটেজি তাদের পতন ডেকে এনেছে। তাই আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রয়াত সিপিএম নেতা মুজফফর আহমেদ বা কাকাবাবুর জন্মদিন উপলক্ষে সমস্ত পার্টির সদস্যকে নিয়ে শাখা ও এলাকায় পাঠচক্র অনুষ্ঠান হয়। সেই পাঠচক্রের বিষয়বস্তুর নির্ধারিত হয়েছে "নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি ও আমাদের কাজ।" আসলে এখানে বাম শীর্ষ নেতারা বিধানসভা ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে সংগঠনের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সম্বন্ধে আলোচনা করবেন। সেই আলোচনায় শাখা ও এলাকার কমিটিগুলির কাছে নোট পাঠানো হয়েছে। আসলে সংগঠনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সিপিএমের (CPIM) নিচুতলার সংগঠনের কর্মীদের সাথে সরাসরি যোগসূত্র তৈরি করতে চায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারা।
শীর্ষ নেতারা শাখা এবং এলাকা কমিটির কাছে যে নোট পাঠিয়েছে তাতে বিশেষভাবে বিজেমুল তত্ত্ব খারিজের কথা বলা হয়েছে। শীর্ষ নেতারা মেনে নিয়েছেন যে তৃণমূল ও বিজেপিকে সমমূল্যায়ন করা উচিত হয়নি। নোটে বলা হয়েছে, "বিজেপি ও তৃণমূলের বিষয়ে পার্টির অবস্থান নিয়ে, কিছু স্লোগান নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। পার্টির কর্মসূচিগত বোঝাপড়া হল, বিজেপি আর অন্য কোনও রাজনৈতিক দল এক নয়। বিজেপিকে পরিচালনা করে ফ্যাসিবাদী আরএসএস। দুটি দল সম্পূর্ণ আলাদা। এটাই পার্টির বোঝাপড়া।" এছাড়াও নোটে তৃণমূলের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সমালোচনার নিন্দা করা হয়েছে। "দিদিকে বলো" বা "দুয়ারে সরকার" প্রকল্পের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, "সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পকে ইতিবাচক হস্তক্ষেপের পরিবর্তে ছোট করে দেখা ঠিক হয়নি। তৃণমূল জনমোহিনী প্রকল্পের সুফল যে পেয়েছে তার প্রমাণ নির্বাচনের ফল।"
এছাড়াও সিপিএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে চলতি বিধানসভা নির্বাচনে "সংযুক্ত মোর্চা" শব্দবন্ধ নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে দলের অন্দরে। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, "নির্বাচনের সময় সংযুক্ত মোর্চার শব্দ হলেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন আমরা ফন্ট ব্যবহার করছি না। আসলে আমাদের কাছে ফ্রন্ট মানে বামফ্রন্ট। সংযুক্ত কিষান মোর্চার নামে যদি ৫০০ টির বেশি সংগঠন হতে পারে তাহলে বিজেপি তৃণমূল বিরোধী সব শক্তিকে কেন আমরা সংযুক্ত মোর্চার নাম দিতে পারব না। এখনই আমরা সংযুক্ত মোর্চা তুলে দিতে চাই না। আমরা চাই আগামী ৭টি বিধানসভা উপনির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চার যারা প্রার্থী দিয়েছিল, তারা সেখানেই লড়ুক।"