মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে নম্বর বৃদ্ধিতে জেলায় জেলায় চাপ সৃষ্টির অভিযোগ
অভিভাবকদের পাশাপাশি স্কুল পরিচালন সমিতি ও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে
রাজ্যে কোভিড (Covid-19) আবহের জেরে সম্পূর্ণ বাতিল হয়েছে মাধ্যমিক (Secondary) ও উচ্চ মাধ্যমিক (Higher Secondary) পরীক্ষা। রাজ্যের শিক্ষা দফতর ফলাফলের রূপরেখা তৈরি করে ইতিমধ্যেই সমস্ত বিদ্যালয়ের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। এমনকী এ-ও বলা হয়েছে স্কুল গুলিতে যদি কোন নম্বরের কারচুপি ধরা পড়ে, তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষার্থীদের নম্বর বৃদ্ধিতে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বাড়তি চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। কেবল অভিভাবক নয়, স্কুল পরিচালন সমিতি এবং স্থানীয় স্তরের নেতৃত্বদের পক্ষ থেকে বাড়তি চাপ আসছে বলে অভিযোগ করছেন একাধিক স্কুলের শিক্ষকরা।
স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা ঘোষণার পর গত কয়েক দিন ধরেই জেলার বিভিন্ন স্কুলে নম্বর বৃদ্ধিতে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের একাংশের দাবি, নম্বর পাঠানোর আগে তাঁদের সঙ্গে বসে আলোচনা করতে হবে। সবসময়ই যে অভিভাবকদের একাংশ এ কাজ করছেন তা নয়, এর পেছনে প্রচ্ছন্ন ভাবে মদত দিচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
একটি বেসরকারি স্কুলে কর্মরত শিক্ষক সমরেশ মণ্ডল জানাচ্ছেন, "কেবল সরকারি স্কুল নয়, বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলেও চাপ সৃষ্টি করছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের দাবি বাড়তি নম্বর দিতে হবে। পর্ষদ বা সংসদের কাছে নম্বর পাঠানোর আগে অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। শুধু তাই নয়, এরফলে বাড়তি চাপ আসছে জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকেও।" নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকের কথায়, "করোনার কারণে স্কুলে কোন ক্লাস হয়নি। সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেনি। এমন অবস্থায় আমাদের ছেলে মেয়েরা ঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারেনি। এখন যদি তাদের কম নম্বর দেওয়া হয়, তাহলে তাদের ভবিষ্যত কী? এমনিতেই দিল্লি বোর্ডের ভুরিভুরি নম্বরের কাছে মার খাচ্ছে আমাদের ছেলে মেয়েরা, এখন যদি অতিমারির অজুহাত দিয়ে ছেলে মেয়েদের কম নম্বর দেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে তারা কী করবে?" কিন্তু এইভাবে অনৈতিক উপায়ে নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া কি ঠিক? এ প্রশ্নের উত্তরে সেই অভিভাবক জানাচ্ছেন, "আপষে নাহলে আন্দোলনে তো যেতেই হবে। আমরা ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত।"
জুলাইয়ের মধ্যেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করার কথা বলেছে রাজ্য সরকার। তার জন্য সমস্ত স্কুলকে সঠিক সময়ে নম্বর পাঠানোর নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নম্বর বৃদ্ধি নিয়ে যদি লাগাতার বিক্ষোভ চলতে থাকে, তাহলে এ কাজে তো গড়িমসি হবে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ। রাজ্য সরকারের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।