মোদির বৈঠকে অনুপস্থিতির জের, আবার কেন্দ্রীয় কমিটির তলব আলাপনকে
কলাইকুন্ডা বিমান ঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত না থাকার কারণে এই ডাক পেলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে উপস্থিত না থাকার ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর আচরণবিধি নিয়ে আরো কাজ শুরু করতে চলেছে অনুসন্ধান কমিটি। দিন কয়েক আগেই এই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। সূত্রের খবর, পুজো মিটলে সেই কমিটির সামনে হাজিরা দিতে হতে পারে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে আলাপনবাবু সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের কাছে দ্বারস্থ হতে পারবেন। তাই সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
চলতি বছরের ২৮ মে কলাইকুন্ডা বিমান ঘাঁটিতে যশ পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা নিয়ে একটি বৈঠক করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী এবং প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর। কিন্তু সেই বৈঠকে না গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষয়ক্ষতি রিপোর্ট তুলে দিয়ে তার অনুমতি নিয়ে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকের সশরীরে হাজির না থাকার জন্য এরপর চাপে পড়েন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বিরুদ্ধে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আইনে কেন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না তা নিয়ে একটি লিখিত জবাব চাই কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রের চিঠির উত্তর দিলেও গত জুন মাসে কেন্দ্রীয় কর্মীবর্গ মন্ত্রক চিঠি পাঠায়, অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে অথবা বক্তব্য লিখিতভাবে জানাতে হবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।এরকম না হয় তাহলে অনুসন্ধান কমিটি তার বিরুদ্ধে একতরফা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। সূত্রের খবর সেই নির্দেশে সাড়া দিয়ে নিজের বক্তব্য কেন্দ্রকে লিখিতভাবে ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু সূত্রের খবর, আগামী ১৮ অক্টোবর অনুসন্ধান কমিটির সামনে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্য সচিব এবং বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে অনেকে কথা বলছেন, কেন্দ্রের ওই নির্দেশিকা না মেনে হাজিরা দেওয়ার পরিবর্তে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হতে পারেন। যদিও এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। অপরদিকে, রাজ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট বার্তায় মন্তব্য করলেন, আইন সকলের ঊর্ধ্বে, তাই প্রাক্তন মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আচরণবিধি নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধান অফিসার নিয়োগ করা হবে। তবে রাজ্যের অভিজ্ঞ আমলারা মনে করছেন, এভাবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরুদ্ধে আচরণবিধি নিয়ে অভিযোগ তোলা উচিত নয়। কারণ রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিব হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ তাকে আগে মানতে হবে। তাছাড়া যে বৈঠক নিয়ে এত বিতর্ক, সেই বৈঠক থেকে বেরোনোর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অনুমতি গ্রহণ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এরকম একটা অভিযোগ তোলার কোন মানে হয় না।