অধিকারীদের ক্ষমতা খর্বে মমতার মন্ত্রিসভায় অখিল গিরি
অধিকারীরা দলছাড়া হতেই মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন অখিল, মত রাজনৈতিক বিশ্লেষক একাংশের
অধিকারী গড়ে ভাঙন ধরতেই তৃণমূলে 'ব্রাত্য' অখিল গিরি বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মুখ। একুশের নির্বাচনে রামনগর বিধানসভার জয়ী তৃণমূল প্রার্থী এবার মমতার মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষক একাংশের মতে, অধিকারীরা দলছাড়া হতেই মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন অখিল।
অখিল গিরির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো সঙ্গী।বহুদিন তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্য। ২০০১ সালে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন। ঠিক পরের বার ২০০৬ সালে সিপিএমের স্বদেশ নায়কের কাছে পরাজিত হন। এরপর ২০১১, ২০১৬-তে পরপর জয়ী হলেও মমতার মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুরের আনাচে-কানাচে কানাঘুষো ছিল যে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে মতানৈক্যের ফলে তৃণমূলে 'ব্রাত্য' অখিল। অধিকারী পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক থাকলেও রাজনৈতিক সম্পর্ক মোটেই মধুর ছিল না - এ কথা সকলের জানা।
একুশের নির্বাচনে আবার স্বমহিমায় ফিরে আসেন অখিল গিরি। এটি ছিল উনার কাছে 'প্রেস্টিজ ফাইট'। অধিকারী ছাড়া তৃণমূলের শক্তি পরীক্ষায় ফের রামনগর কেন্দ্রে উত্তীর্ণ হন অখিল গিরি। সেই স্বদেশ নায়ককে হারিয়ে চতুর্থ বারের জন্য বিধায়ক হন, যদিও প্রতিপক্ষ স্বদেশ ছিলেন এবার বিজেপির প্রার্থী। শুভেন্দু অধিকারী দল বদলের পরপরই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তৃণমূলের। শিশির অধিকারীকে জেলা সভাপতির জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি শুভেন্দুর আর এক ভাই সৌমেন্দুও কাঁথি পুরসভার প্রশাসনিক দায়িত্ব হারায়। এমন অবস্থায় ক্রমশ জেলার প্রধান মুখ হয়ে উঠতে থাকেন অখিল গিরি এবং ডঃ সৌমেন মহাপাত্র। অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরি ইতিমধ্যেই জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। এমনকি অধিকারীদের অধিকার খর্ব হওয়ার বাড়তি দায়িত্ব পান তিনি। প্রমাণ করেন যে অধিকারীরা ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। এমন অবস্থায় মমতার সরকার অখিল গিরিকে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দিয়ে অধিকারীদের পাল্টা চাপ দিলেন বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। সেই সঙ্গে ডঃ সৌমেন মহাপাত্রও মমতার মন্ত্রী সভায় জায়গা পেয়েছেন।
অখিল গিরির এবং ডঃ সৌমেন মহাপাত্রের মন্ত্রীত্বে খুশি জেলা তৃণমূল। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর মামুদ হোসেন জানিয়েছেন "জেলায় দুজন মন্ত্রী হলো সৌমেন মহাপাত্র এবং ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে দুজনেই জেলার উন্নয়নের কাজে ব্রতী হবেন আশা করি।"