নাবালিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত পরিবারেরই ৪ সদস্য, কঠোর শাস্তির নির্দেশ আদালতের
নাবালিকার পিসতুতো দাদা ও পিসতুতো জামাইবাবুকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে আদালত
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগে সম্প্রতি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তাঁরই বাড়ির চারজন আত্মীয়। আদালত নাবালিকার পিসতুতো দাদা ও পিসতুতো জামাইবাবুকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে। অন্যদিকে বাকি দুই অভিযুক্ত অর্থাৎ নাবালিকার পিসেমশাইকে আদালত ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং দাদাকে জুভেনাইল কোর্টে পাঠানো হয়েছে। আসলে ঘটনার সময় দাদা নিজেই নাবালক ছিলেন। তাই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করলেও সাজা ঘোষণা স্থগিত রেখে তাকে জুভেনাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটি ২০১৮ সালের। কাটোয়া থানার অন্তর্গত দাঁইহাট শহরের স্কুলমোড়ের বাসিন্দা ওই নাবালিকা। ১৫ বছর বয়সে ওই বালিকা ২০১৮ সালের ২০ মার্চ কাটোয়া থানা ধর্ষণ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, "২০১২ সালে ওই নাবালিকার মায়ের মৃত্যু হয়। তার বাবা একটি দোকানে কাজ করতো। তাই মেয়েটিকে তিনি দক্ষিণেশ্বরে পিসির বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে স্কুলে ভর্তি হয় ওই বালিকা। কিন্তু বছর দুয়েক পরেই সে দাঁইহাটায় ফিরে আসে। সেখানে ফিরে এসে হঠাৎ করেই একদিন ওই কিশোরী নিখোঁজ হয়ে যান। পরে জানা যায় স্থানীয় এক যুবকের সাথে সে পালিয়ে গিয়েছিল। মেয়েটিকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য স্থানীয় একটি চাইল্ডলাইনে তার কাউন্সেলিং শুরু হয়। সেখানেই জানা যায় অবিশ্বাস্য তথ্য। ওই নাবালিকা জানায় যে সে বড় পিসির বাড়িতে থাকার সময় তাকে জোর করে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়।"
ওই কিশোরী জানান যে পিসির বাড়িতে পিসতুতো দাদা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং পিসতুতো জামাইবাবু শংকর রায় তাকে একাধিকবার জোর করে ধর্ষণ করে। তারপর বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে আসার পর নিজেদের বাড়িতে আরো এক পিসেমশাই প্রদীপ সরকার ও কিশোরীর নিজের দাদা তাকে যৌন নিগ্রহ করে। কাটোয়া চাইল্ডলাইনের সাহায্যে ওই নাবালিকা এফআইআর দায়ের করে কাটোয়া থানায়। তারপরই পুলিশি তৎপরতায় গ্রেফতার হয় ওই চার কালপ্রিট।
গত বৃহস্পতিবার কাটোয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত ৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে কঠোর শাস্তির আদেশ দিয়েছে। বিচারক সুকুমার সূত্রধর পিসতুতো দাদা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং পিসতুতো জামাইবাবু শংকর রায়কে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার সাজা দেন। পাশাপাশি দাঁইহাটার পিসেমশাই প্রদীপ সরকারকে আদালত ৩ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। নাবালিকার নিজের দাদা ঘটনার সময় যেহেতু নাবালক ছিল তাই আপাতত তার সাজা ঘোষণা স্থগিত রেখেছে আদালত। এবার এই কেস জুভেনাইল আদালতে যাবে।