দিল্লি পুলিশের জালে 'বুল্লি বাই' অ্যাপ নির্মাতা, গ্রেফতার অসমের জোরহাট থেকে
মূল অভিযুক্ত নীরজ বিষ্ণোই ভোপালের ভেলোর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র
'বুল্লি বাই' অ্যাপ নিয়ে গোটা দেশের সাইবার দুনিয়া সরগরম হয়ে রয়েছে। নতুন বছরের শুরুতেই এই অ্যাপের কদর্যতা প্রকাশ্যে আসে। সেই নিয়ে শিবসেনা সাংসদ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলরা প্রতিবাদ করলে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক চটজলদি পদক্ষেপ নিয়ে অ্যাপটি ব্যান করে দিয়েছিল। কিন্তু তখন থেকেই দিল্লি পুলিশের সাইবার শাখা এই অ্যাপ তৈরীর পিছনের মূল অভিযুক্তের খোঁজে তদন্ত চালাচ্ছিল। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে 'বুল্লি বাই' অ্যাপের নির্মাতা। ওই অ্যাপকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত নীরজ বিষ্ণোইকে অসম থেকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। এছাড়াও এই মামলায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১৮ বছর বয়সী শ্বেতা সিং, উত্তরাখণ্ডের মায়ানক রাওয়াল ও ব্যাঙ্গালুরুর বিশালকুমার ঝাঁ।
তবে কে এই ২১ বছর বয়সী নীরজ বিষ্ণোই? জানা গিয়েছে, অসমের দিগম্বর জোরহাটের বাসিন্দা এই যুবক। সে ভোপালের ভেলোর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দিল্লি পুলিশ এবং জোরহাট পুলিশের যৌথ বাহিনী গত বুধবার ওই যুবকের বাড়িতে হানা দেয়। সেখানেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং সেইসাথে তার মোবাইল ও ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করে নেয়। তবে ওই যুবকের বাবা দশরথ বিষ্ণোই জানিয়েছেন, "তার ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষী। মধ্যবিত্ত হওয়ায় ছেলের ল্যাপটপ সরকারের থেকেই পাওয়া। এছাড়া বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোনটি ওই যুবকের মায়ের। ছেলে পড়াশোনা সূত্রে দিনের বেশিরভাগ সময় অনলাইন ক্লাস করে এবং ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করে। তার ছেলে ১২ ক্লাসের পরীক্ষায় ৮২ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাস করেছে। সে এমন অনৈতিক কাজ করতেই পারে না।" তবে অভিযুক্তকে নিয়ে দিল্লি পুলিশের দল ওই দিন বিকেলেই রাজধানীতে ফিরে এসেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 'বুল্লি বাই' অ্যাপ খোলার পরই বুল্লি বাই হিসাবে একাধিক মুসলিম মহিলাদের মুখ দেখা যেত। টুইটারে যে সমস্ত মুসলিম মহিলাদের জোরদার উপস্থিতি রয়েছে, তাঁদের খুঁজে বের করে সেই ছবি এই অ্যাপে ব্যবহার করা হত। মুসলিম মহিলাদের অবমাননা করতে প্রতিদিন নতুন নতুন মহিলার নাম ও ছবি নিয়ে তাদের ওই 'দিনের চুক্তি' বলে অভিহিত করত। প্রকৃত কোনও নিলাম কখনো না হলেও এই অ্যাপটির একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম মহিলাদের হেয় করা, অপমান করা এবং হেনস্থা করা।